রায়গঞ্জ: স্বামীকে না জানিয়ে পিসির ছেলের বিয়েতে যোগ দেওয়ায় ‘শাস্তি’। স্ত্রীকে ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় ও সারা শরীরে আঘাত করে বাড়ি সংলগ্ন জঙ্গলে ফেলে রাখল অভিযুক্ত স্বামী। ওই মহিলার চিৎকারে ছুটে আসে প্রতিবেশিরা। তাঁরা জখম মহিলাকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে ওই মহিলা সেখানেই চিকিৎসাধীন। তবে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়েছে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াগঞ্জ থানার কুনোর সংলগ্ন মাঝদিয়া গ্রামে। ঘটনা সামনে আসতেই অভিযুক্ত স্বামীকে বেধড়ক মারধর করে গ্রামের বাসিন্দারা। সেখান থেকে কোনক্রমে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত স্বামী।
জানা গিয়েছে, জখম ওই মহিলার নাম মিনতি মাহাতো (২৫)। পাঁচ বছর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশুমণ্ডির বাসিন্দা মিনতি মাহাতোর সঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার কুনোর সংলগ্ন মাঝদিয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় টোটোচালক মহেশ মাহাতোর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর ওপর নির্যাতন করত মহেশ। বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বারবার চাপ দেওয়া হত বলে অভিযোগ। বছর দুয়েক আগে ১ লক্ষ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে এসে স্বামীকে দেন ওই মহিলা। সেই টাকা দিয়েই টোটো কেনে মহেশ। এরপর পাকা ঘর করার জন্য আরও ২ লক্ষ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বলে। সেই টাকা না নিয়ে আসায় বাবার বাড়ি সহ শ্বশুরবাড়ির কোনও আত্মীয়র বাড়িতে না যাওয়ার হুলিয়া জারি করে স্বামী। এরপর গতকাল স্বামীকে না জানিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান মিনতি। সেখান থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পর যাবতীয় গণ্ডগোলের সূত্রপাত। দুই নাবালক সন্তানের সামনেই মিনতিকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ফেলে দেয়। মিনতি ও তাঁর নাবালক সন্তানের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে জখমকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি গণধোলাই দেওয়া শুরু করে অভিযুক্ত স্বামীকে। এই ঘটনায় কালিয়াগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে দাবি জখম বধূর পরিবারের।