বালুরঘাট: সেনাকর্মী স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে ধর্নায় বসেছিলেন স্ত্রী। পুলিশি হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটমাট হয়। ঘটনার একদিন পরই ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী-কে খুন করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ওই সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দারা জখম অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণচক আলমে। এদিকে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত সেনাকর্মী সোম মুর্মুকে মারধর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। পরে পুলিশ সোম মুর্মুকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করে। এনিয়ে নির্যাতিতার মা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বালুরঘাট থানায়। এই ঘটনায় ওই সেনাকর্মীর বাবা, দুই দিদি ও সরকারি চাকরি করা জামাইবাবুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেই সোম মুর্মুকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ চক আলমের বাসিন্দা সোম মুর্মু। পেশায় সেনাকর্মী। বর্তমানে রাজস্থানে কর্মরত। প্রায় বছর পাঁচেক আগে সোম মুর্মু রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন গ্রাম পঞ্চায়েতের বংশীপুরের ওই মহিলাকে। তার এক বছর পর সামাজিক অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেন। বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হলেও তাদের কোনও সন্তান নেই। প্রায় সাত মাস আগে থেকেই ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানার পর থেকেই অশান্তি বাড়তে থাকে। অভিযোগ, ওই সময় ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। তারপরই ওই মহিলা বালুরঘাট মহিলা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নিজের বিপদ বুঝে স্ত্রীর কাছে ভুল স্বীকার করে নেন স্বামী এবং মামলা তুলে নেওয়া কথা বলে। মামলা তুলে নিতেই স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় অভিযুক্ত।
এই ঘটনার পর গত শনিবার স্বামীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন স্ত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। পরে পুলিশ উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মিটমাট করে দেন এবং স্ত্রীকে স্বামীর বাড়িতে প্রবেশ করিয়েও দেন। এদিকে ওই রাতেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান সোম। গতকাল গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। ঘরের দরজা খুলতেই স্ত্রীর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে থাকেন। অভিযোগ, সেসময় মুখ ঢাকা ছিল সোমের। চিৎকার চেঁচামেচি করলে কোনও রকমে রক্ষা পান ওই মহিলা।