দুর্গাপুর: তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে বুধবার দুর্গাপুরে মেলা ময়দানে আসেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি ও কেন্দ্র সরকারকে নানা ইস্যুতে আক্রমণ করেন অভিষেক। পাশাপাশি আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থী করা নিয়ে দলের নেতাদেরই কড়া হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বিশেষ করে দলের টিকিট না পেয়ে কেউ যদি নির্দল প্রার্থী হন, তাঁদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘নির্দল হিসাবে দাঁড়াতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, দলে আর ফিরতে পারবেন না। দলে ফেরার দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ে এলাকার মানুষ ও বুথ সভাপতির মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কেন না, তারাই দলের সম্পদ। এবার আর কোনও নেতা দলের প্রার্থী ঠিক করবেন না। কোনও নেতা যদি এলাকায় বলে বেড়ান, তিনি প্রার্থী ঠিক করবেন, তাহলে তিনি তা নিজের দায়িত্বে বলবেন। কেন না, সেই নেতাই জানেন না, আগামীদিনে তিনি দলে থাকবেন কিনা। যাকে প্রার্থী করা হবে, তাকে জেতাতে হবে। তাকে কোনও নেতার পছন্দ না হলেও, কিছু করার নেই।’
অধিবেশন মঞ্চ থেকে এদিন অভিষেক কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘বাংলার মানুষের অধিকারের টাকা নরেন্দ্র মোদি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে দিয়েছে। কেন্দ্রের কাছে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে মোট পাওনা ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় হেরে গিয়ে কেন্দ্র সরকার এই টাকা আটকে দিয়েছে। বাংলার মানুষদের এইসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে।’ তাঁর কথায়, ‘গত ২২ দিন ধরে বাইরে রয়েছি। কোচবিহার থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেছি। গ্রামের রাস্তায় ঘুরছি। চায়ের দোকানে বসে মানুষের অভাব অভিযোগ শুনছি। আমার সাধ্যমতো তা সমাধানের চেষ্টাও করছি।’
তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচিতে গতকাল পূর্ব বর্ধমান থেকে পানাগড় হয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ঢোকেন অভিষেক। এদিন প্রথম তিনি যান কাঁকসার পানাগড়ের গুরুদ্বারে। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায় সহ অন্যরা। সেখানে তিনি গুরুদ্বারা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বসে প্রার্থনা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। বেশ কিছুক্ষণ তিনি সেখানে ছিলেন। গুরুদ্বারা থেকে বেরিয়ে বাইরে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় বিশেষভাবে সক্ষম যুবক দুর্গাপুরের শিমুলতলার বাসিন্দা শেখ আকবর আলিকে। তিনি জানান, তাঁর এলাকায় মদ ও গাঁজার অবৈধ কারবার চলছে। স্থানীয় থানার পুলিশকে বলে কোনও লাভ হয়নি। তাই তিনি অভিষেককে বললেন। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। পানাগড় থেকে অভিষেক আসেন চিত্রালয় বা রাজীব গান্ধি মেলা ময়দানে। গান্ধি মোড়ে তাঁকে স্বাগত জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। এই ময়দানেই তাঁবু ফেলে পঞ্চায়েতে জেলার আটটি ব্লকের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ভোট গ্রহণ, অধিবেশন ও রাত্রীযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য জেলায় প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটে ব্যালট পেপার লুঠপাট ও বিশৃঙ্খলা হলেও এদিন পশ্চিম বর্ধমানে তেমন কিছু হয়নি।