নাগরাকাটাঃ শুধু প্রকৃতির অপূর্ব ল্যান্ডস্কেপই নয়। গরুবাথানের ঝান্ডিতে লুকিয়ে রয়েছে বিহঙ্গকূলের অপার সমাহারও। পাখি প্রেমীদের কাছে যা এককথায় স্বর্গরাজ্য। সম্প্রতি অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় নামে এক পাখি প্রেমীর লেন্সে ধরা পড়েছে সেখানকার ৬০ টিরও বেশী প্রজাতির পাখি। যেগুলির বেশ কয়েকটিই সচরাচর দেখা যায় না। বর্তমানে হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা ওই কলকাতার কন্যা বলেন, ঝান্ডি সহ আশপাশের একাধিক স্থান যেন প্রাকৃতিক পাখিরালয়। যা পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত আকর্ষণের হয়ে উঠতে পারে। দরকার শুধু সঠিকভাবে সব কিছু প্রচারের আলোয় তুলে ধরা।
ঠিক কি ধরনের পাখি তিনি দেখতে পেয়েছেন ঝান্ডিতে? দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ানো ওই অর্নিথোফিলস জানাচ্ছেন তাঁর লেন্সে সেখানে ধরা পড়েছে অন্তত ৪ প্রজাতির সান বার্ডস। যার মধ্যে রয়েছে নানা রঙে রঞ্জিত মিসেস গোল্ড। যা বার্ডারদের কাছে পরম আকাঙ্খিত। দেখতে পেয়েছেন ফ্লাওয়ার পেকার, ক্রমশ বিরল হয়ে আসা ব্লু ম্যাক পাই, গ্রেট বারবেট, ৫-৬ রকমের লাফিং থ্রাস, রেড বিলড লাইওথ্রিক্স, হোয়াইট টেইলড নাটহ্যাচ, ডার্ক সাইডেড ফ্লাই ক্যাচার, লেসার ইয়েলোনেপ, ডেভিশন’স লিফ ওয়ার্বলার, শর্ট বিলড মিনিভেটের মতো হরেক কিসিমের পাখি।
পাখি দেখার জন্য পাহাড়ের লাটপঞ্চার, ঋষভ, রংটং এর মত স্থানগুলি সুপরিচিত। ফি বছর শীত পড়তেই কাতারে কাতারে পাখি প্রেমীরা সেখানে ভিড় জমান। ছুটে আসেন বিদেশীরাও। তবে ঝান্ডি কিংবা মাত্র দু কিলোমিটার দূরের দূরখোলা নামে একটি স্থানে প্রচুর জানা অজানা পাখি রয়েছে বলে অনিন্দিতার পর্যবেক্ষণ। হর্নবিল, দার্জিলিং উড পিকার বা হিমালয়ান উড পিকারদের কাছে ওই সব স্থান যেন শান্তির নীড়। দূরখোলাতে চেরি গাছের ফুলের মধু খেতে মিসেস গোল্ড পাখিও ছুটে আসে। ওই পাখি প্রেমীর বক্তব্য, ওদের সবাই দু চোখ ভরে দেখুক। কোন সমস্যা নেই। তবে কখনোই যেন বিরক্ত করা না হয়। এই সব সম্পদ উত্তরবঙ্গের অহঙ্কার। মালবাজারের এক পর্যটন ব্যবসায়ী রাজেন প্রধান বলেন, ট্রেকিং করেও ঝান্ডিতে অজস্র পাখির দর্শন হতে পারে। তাতে একদিকে অ্যাডভেঞ্চার আবার অন্যদিকে প্রকৃতির ওই সমস্ত উপহার চাক্ষুস দেখা দুই-ই একসাথে হতে পারে। তবে এজন্য একটু ধৈর্য্যের প্রয়োজন। দর্জি প্রধান নামে ঝান্ডির এক পর্যটন কর্মীর কথায়, বহু পাখির নাম ও কোথায় দেখা মিলতে পারে তা অনিনিন্দা দেবীর কাছ থেকে জেনে নিয়েছি। এতে অন্য পর্যটকদের দেখাতে সুবিধা হবে।