মালদা: ‘বাংলায় এনআরসি হতে দেব না’, বৃহস্পতিবার মালদায় প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মালদা ও মুর্শিদাবাদ-এই দুই জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ফের একবার এনআরসি ইস্যুতে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, ‘আমি বাংলায় এনআরসি হতে দেব না। আমাদের আবার চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে সরাসরি বলা না হলেও, ঘুরিয়ে এনআরসির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমি এনআরসি কোনওভাবেই করতে দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবার এই কাগজ, সেই কাগজ খোঁজা হচ্ছে। কোনও কাগজ না থাকলেই আপনাকে বিদেশি বানিয়ে দেবে। ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। যেমনটা অসমে করা হয়েছে। আমি এই কাজ করতে দেব না।’
সেই সঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম রাখা ও ১০ বছর অন্তর আধার কার্ড আপডেট করার পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা সবাই ভোটার তালিকায় নাম রাখবেন। কারণ, ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও ওরা কথা বলতে পারে। তাই সবাইকে বলুন ভোটার তালিকায় নাম রাখতে। আর ঠিক সময় আধার কার্ড আপডেট করতে হবে। ১০ বছর অন্তর সেটা আপডেট করতে হবে।’
তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আনিস খান হত্যা, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে হেনস্তার ঘটনার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনেই যা স্পষ্ট। সেখানে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। এই বিধানসভার অধিকাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। উপনির্বাচনে বায়রনের জয়ে এটা স্পষ্ট যে, সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের থেকে সরেছে। পঞ্চায়েত হোক বা বিধানসভা কিংবা লোকসভা নির্বাচন-সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের কাছে বিরাট ফ্যাক্টর। মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলিতে জয় পেতে হলে সেই ভোট যে প্রয়োজন, তা বিলক্ষণ জানেন দলনেত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে সংখ্যালঘুদের কাছে টানতেই এদিন মালদার সভা থেকে ফের এনআরসি ইস্যু উস্কে দিলেন মমতা।