শিলিগুড়ি: পাঁচ নদীর প্রাণ ফেরাতে সচেষ্ট সেচ দপ্তর। প্রথম ধাপে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলিগুড়ি শহর ও সংলগ্ন এলাকার পাঁচটি নদী সংস্কার করা হচ্ছে। তালিকায় রয়েছে মৃতপ্রায় জোড়াপানি, ফুলেশ্বরী, মহিষমারি, পঞ্চনই ও সাহু। ড্রেজিং হয়ে গেলে প্রতিটি নদীপাড়ে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি গাছ লাগানোর কাজ করবে পুরনিগম। যেসমস্ত বাড়ির সোকপিটের পাইপ নদীতে এসে মিশেছে, সেখানে তা সরিয়ে নতুন শৌচালয় তৈরি করা হবে। বুধবার প্রচারের ফাঁকে ফুলেশ্বরী নদীর কাজ ঘুরে দেখেন মেয়র গৌতম দেব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরনিগমের বাস্তুকাররা। গৌতম বলছেন, ‘দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সেচ দপ্তর কাজ করে দিচ্ছে। আমরা সেচ দপ্তরের কাছে কৃতজ্ঞ।’
আগে লেবার নামিয়ে কাজ করানো হলেও এবার পুরোটাই হচ্ছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। নদীর বুকে আর্থমুভার নামিয়ে দুই ফুট গর্ত করে মাটি তোলা হচ্ছে। আবর্জনায় রুদ্ধ নদী থেকে উঠে আসছে প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা। ওই আবর্জনা আপাতত নদীর ধারেই জমা করা হচ্ছে। তবে, পরে তা কোথায় সরানো হবে তা নিয়ে শুক্রবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই ফুলেশ্বরী, জোড়াপানির মতো নদীগুলির সংস্কার হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নদীতে আবর্জনা ফেলা, পাড় দখলের মতো ঘটনা ঘটেছে। তাই পুরনিগমে তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেন গৌতম। সেইমতো সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে কথা বলেন। সেচমন্ত্রী একবার শিলিগুড়িতে এসে নদীগুলি পরিদর্শনও করেন। এরপরই শহরের পাঁচটি নদী সংস্কারের জন্য প্রথম ধাপে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।
গৌতম জানিয়েছেন, নদী সংস্কার শেষ হলে চারপাশে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। এর বাইরে শহরের ১৯টি সেতুর ওপর ছয় ফুটের নেট লাগাবে সেচ দপ্তর। ইতিমধ্যে পুরনিগমের দুটি সেতুর ওপর নেট লাগানো হয়েছে। বাইরে থেকে যাতে কেউ আবর্জনা নদীতে না ফেলতে পারেন তার জন্যই এমন ব্যবস্থা। তারপরও কেউ যদি নদীতে আবর্জনা ফেলেন তবে জরিমানা করা হবে। যে সমস্ত নদীর ধারে বাজার রয়েছে সেই এলাকায় ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গেও কথা বলা হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে নদীতে থার্মোকলের বাক্স কিংবা আবর্জনা না ফেলেন তা নিশ্চিত করা হবে। ফুলেশ্বরীর পর জোড়াপানি সংস্কার হবে। এরপর ধাপে ধাপে মহিষমারি, পঞ্চনই, সাহু নদীর সংস্কারের কাজ হবে বলে পুরনিগম সূত্রে খবর। সেচ দপ্তর কাজ করলেও পুরনিগম পুরো বিষয়টি তদারকি করছে।