নয়াদিল্লি: নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করে বিবৃতি জারি করেছিল ২০টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে নবনির্মিত সংসদ ভবনের উদ্বোধন না করানোর প্রতিবাদে সরব হয়েছিল ঐক্যবদ্ধ বিরোধী শিবির। এনিয়ে দেশ জুড়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের বড় অংশের অনুপস্থিতি কার্যত অগ্রাহ্য করেই ভবন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, নিজের ভাষণে মোদি একবারের জন্যেও ‘বিরোধী’, ‘বয়কট’ বা এমন কোনও শব্দপ্রয়োগ করেননি। এরপরই বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধীদের এই ‘গণ-বয়কট’ আদৌ কি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ, না কি তা নিতান্তই ‘কাগুজে’ আস্ফালন? বাস্তবিক রণকৌশলের সঙ্গে যার কোনও সম্পর্কই নেই! অনেকেই এক্ষেত্রে মনে করছেন, সংসদ ভবনের উদ্বোধন বয়কট করে আসলে ভুলই করেছেন বিরোধীরা।
লোকসভা সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয় শাসক-বিরোধী উভয় রাজনৈতিক শিবিরকে। এর মধ্যে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হন কংগ্রেসের লোকসভা দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁর বক্তৃতা রাখার জন্যেও বরাদ্দ করা হয়েছিল৷ যদি বিরোধীরা সম্মিলিতভাবে সংসদ ভবন বয়কট করার সিদ্ধান্ত না নিতেন, বাকিটা কীভাবে উতরে দিতে হয়, তা হাতেনাতে দেখিয়ে দিতেন অধীর।
সংসদীয় পরিসরে সুবক্তা এবং ‘ডাকাবুকো’ সাংসদ হিসেবে পরিচিত অধীররঞ্জন চৌধুরী নি:সন্দেহে তাঁর ভাষণে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কংগ্রেসের ভূমিকা, নেহেরু, ইন্দিরা থেকে রাজীব, সনিয়া থেকে রাহুল গান্ধির ভূমিকার কথা বিনাবাধায় রাখতে পারতেন। এমনকি ভারত জোড়ো যাত্রা থেকে শুরু করে কুস্তিগিরদের ধর্না, সাভারকার থেকে গান্ধিজির মাহাত্ম্য -সবই তুলে ধরতে পারতেন। প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ প্রদর্শনই যদি উদ্দেশ্য হয়, এর চেয়ে ভালো মঞ্চ পেতেন না বিরোধীরা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সার্বিক পরিস্থিতির নিরিখে ‘ভুল’ পদক্ষেপ নিয়েছে বিরোধী শিবির। ‘আক্রমণাত্মক’ কর্মসূচির বদলে রক্ষণাত্মক নীতি বেছে নিয়ে গোড়ায় গলদ ঘটিয়ে ফেলেছে বিরোধীরা।