উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ এখনও ঘুমিয়ে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। ইসরোর বিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন ২২ সেপ্টেম্বর ঘুম ভাঙবে বিক্রম-প্রজ্ঞানের। তারা জেগে না ওঠায় ধীরে ধীরে সেই আশা ক্ষীণ হচ্ছে। তবুও এখনও আশা ছাড়তে নারাজ ইসরো। ঘুম ভাঙানোর এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের অধিকাংশ মনে করছেন, চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান ৩-এর পুনরায় জেগে ওঠার বিষয়টি স্বপ্নই থেকে যাবে। তবে কি আর সেকেন্ড ইনিংস খেলার সুযোগ পাবে না ভারতের এই চন্দ্রদূত?
চাঁদের মাটিতে ঘুম ভাঙছে না চন্দ্রযান ৩-এর। কোনও সাড়া নেই ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর চাঁদে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল মাইনাস ২০০ নীচে। এই ঠান্ডায় ঘন অন্ধকারে চন্দ্রযান ৩-এর বিক্রম-প্রজ্ঞানের বেঁচে থাকা কার্যত অসম্ভব। চন্দ্রযান-৩ মিশন সফল হওয়ার পরও পুনরায় সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এর আগের সূর্যাস্ত হওয়ার আগেই বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভারের সমস্ত যন্ত্রপাতি স্যুইচ অফ করে ফুল চার্জ দিয়ে স্লিপ মোডে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, ব্যাটারিগুলি যদি চার্জড থাকে তবে তা ১৪ দিন পর্যন্ত চাঁদের জমে যাওয়া ঠান্ডাতেও বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে গরম রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু এখনও তেমনটা ঘটেনি। কোনও সারা মিলছে না দুই সৈনিক ল্যান্ডার বিক্রম ও প্রজ্ঞানের। ইসরোর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবে কাজে আসেনি বলেই মনে করছেন অধিকাংশ গবেষক। ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, ল্যান্ডার বিক্রম ও প্রজ্ঞানকে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছেন না বিজ্ঞানীরা। এক চন্দ্র দিবসের শেষদিন পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। শেষ দিনেও ঘুম ভাঙতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ইসরোর চেয়ারম্যান।
তবে মঝাকাশ বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, রাশিয়ার লুনা-২৫ যানটি সঠিকভাবে অবতরণ করতে পারলে তা হয়তো চন্দ্রযান ৩-এর তুলনায় বেশিদিন চাঁদে টিকে থাকতে পারত। কারণ, একটি প্লুটোনিয়াম রেডিয়োআইসোটোপ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল লুনা ২৫-কে। যা নিউক্লিয়ার ব্যাটারি রূপে কাজ করতে সক্ষম। প্রচন্ড ঠান্ডাতেও এই নিউক্লিয়ার ব্যাটারি তাপ তৈরি সক্ষম। ফলে যানটির যন্ত্রাংশ কিছুটা হলেও কাজ করার ক্ষমতায় থাকত।
একদিকে, চাঁদের মাটিতে ঘুম ভাঙছে না চন্দ্রযান ৩-এর। অন্যদিকে, ঘটে গেল আরও এক মহাজাগতিক কাণ্ড। আয়োনোস্ফিয়ারে একটি গর্ত তৈরি করে ফেলেছে নাসার স্যাটেলাইট ওয়াইরিস রেক্স। জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এটি ফ্লোরিডার স্পেস ফোর্স বেস থেকে যাত্রা শুরু করেছিল স্যাটেলাইটটি। ২০১৮ সালে ডিসেম্বরে পৃথিবী থেকে ১২০ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত গ্রহাণু বেন্নুর কাছে পৌঁছেছিল সে। আরও দুই বছর পর ১০ সেকেন্ডের জন্য গ্রহাণুটিকে স্পর্শ করতে পেরেছিল নাসার এই স্যাটেলাইট। এবার সেই গ্রহাণু থেকে আড়াইশো গ্রাম ধুলো এবং পাথরের নমুনা নিয়ে আমেরিকায় ফিরল নাসার ওই রিটার্ন ক্যাপসুল। গবেষণায় কী পাওয়া গেল, তা আগামী ১১ অক্টোবর প্রকাশ করবে নাসা।