জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: ১৪ বছর আগে মাওবাদীদের হামলায় মারা যান ২৪ জন ইএফআর জওয়ান। শিলদায় ২০১০ সালের মাওবাদী হামলার ঘটনায় ১৩ জন দোষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ মিলল বুধবার। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রয়াত ইএফআর জওয়ান চন্দ্র ছেত্রীর স্ত্রী হেমা ছেত্রী। বললেন, ‘দোষীদের প্রত্যেকের ফাঁসির শাস্তি হলে খুশি হতাম। মাওবাদীদের জন্য আমার সন্তানদের অল্পবয়সে পিতৃহারা হতে হয়েছে।’
তাঁর সংযোজন, ‘স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমার মেয়েকে পুলিশে করণিকের চাকরি দেওয়ায়। ছেলে ইংরেজিতে স্নাতক পাশ করেছে।’
কী ঘটেছিল প্রায় ১৪ বছর আগে? জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ উন্নয়নপল্লির বাসিন্দা চন্দ্র ছেত্রী। ঝাড়গ্রামের (Jhargram) শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদীরা হামলা চালিয়ে ২৪ জন ইএফআর জওয়ানকে গুলি করে হত্যা করেছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন চন্দ্রও। সেসময় তাঁর মেয়ে প্রতিভা ষষ্ঠ শ্রেণি এবং ছেলে কুণাল তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। সেই সময়কার কথা মনে করে হেমা বলেন, ‘স্বামীকে হারিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না ছেলেমেয়েদের কীভাবে মানুষ করব।’
মেদিনীপুরের (Medinipur) ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সেলিম শাহ শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলায় ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ইতিমধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির বাড়িতে হেমা বলেন, ‘এতগুলো বছর পর দোষীরা শাস্তি পেয়েছে। ওদের শাস্তি আরও কঠোর হলে আমরা খুশি হতাম।’ সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে মাওবাদী নেতারা। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন মনসারাম হেমব্রম, ঠাকুরমণি হেমব্রম, কল্পনা মাইতিরা।