কালিয়াগঞ্জঃ কালিয়াগঞ্জের কয়েক’শো বিজেপির নেতা-কর্মীরা যখন বিধায়কের বাড়ি থেকে কয়েকশো মিটার দূরে ভোটের হাওয়া তুলছেন, তখন দেখা মিলল না বিধায়কের। দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত না থাকায় শুরু হয় খোঁজ। কালিয়াগঞ্জে বিধায়কের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সৌমেন রায়ের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী জানালেন, ‘স্যর এখন ঘুমোচ্ছেন।’
স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে উঠছে, ভোটের মুখে বিজেপি বিধায়ক কি কুম্ভকর্ণের ভূমিকা নিয়েছেন? নাকি, বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং গো ব্যাক স্লোগান দেওয়ায় নিজেকে কার্যত ঘরবন্দি করে ফেলেছেন সৌমেন রায়?
শুক্রবার বেলা এগারোটায় ডাকবাংলো রোডের ধারে বিজেপির নির্বাচনি কার্যালয়ে একটি অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্মীদের উজ্জীবিত করতে কর্মীসভা করা হয়৷ উপস্থিত ছিলেন রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী কার্তিক পাল, জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার, মালদা বিভাগের ক্লাস্টার ইনচার্জ শুভেন্দু সরকার প্রমুখ। কিন্তু কালিয়াগঞ্জে থাকলেও দেখা মেলেনি সৌমেনবাবুর।
বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায় কোথায়? প্রশ্ন তুলতেই বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার সৌমেন রায়কে ইঙ্গিত করে স্পষ্ট জানান, ‘উনি হয়তো বা নিজস্ব কাজে কোথাও আছেন। ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীরা ভালোবেসে দল করেন। কর্মীরা আমাদের অমূল্য সম্পদ। তাই কর্মীদের মধ্যে বিধায়ককে নিয়ে কোথাও বিশ্বাসে চিড় ধরেছে, কোথাও আন্তরিকতায় আঘাত লেগেছে। তাই বিজেপি কর্মীরা এধরনের আচরণ করেছে। এটাই স্বাভাবিক। তাই বিধায়কের প্রতি এই ধরনের আচরণের জন্য দলীয় কর্মীদের দলবিরোধী তকমা দিতে আমি রাজি নই।’
আগামী দিনে গৈরিক সৌমেন রায়কে বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পালের হয়ে প্রচারে নামতে দেখা যাবে? অকপটে বাসুদেব সরকার জানান, ‘আলোচনা সাপেক্ষেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে ফের বিজেপিতে ফিরে আসাটা যেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপির নীচুতলা থেকে উচুতলার কর্মী, কার্যকর্তারা মেনে নিতে পারছে না। এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলবদলু বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়কে ঘিরে দলের অন্দরে অসন্তোষের ছবি উঠে আসতেই বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলো যে সৌমেনকে নিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা তুলতে মাঠে নেমে পড়বে তা বলাই বাহুল্য।