উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কোনও ব্যাক্তিস্বার্থে নয়, সমাজসেবামূলক কাজের জন্যই সায়নীকে লক্ষাধিক টাকা দিয়েছিলেন। ঘনিষ্ঠ মহলে এমনই দাবি করেছেন নিয়োগদুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ। শুক্রবার আদালত চত্বরে ঘনিষ্ঠদের কাছে সায়নীকে টাকা দেওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। কোথায় কী উপলক্ষে কত টাকা দিয়েছিলেন সায়নীকে, তা-ও জানিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত কুন্তল।
কুন্তলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের অগাস্ট মাসে সায়নী ঘোষের সঙ্গে আলাপ হয় কুন্তল ঘোষের। শুক্রবার আদালত চত্বরে কুন্তল স্বীকার করেন যে, সায়নীকে ব্যক্তিগত স্বার্থে কোনও টাকা দেননি। পুজো-সহ চারটি সমাজসেবামূলক কাজের জন্য মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেন তিনি। পিআরের মাধ্যমে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল নেত্রীকে। এ ছাড়া, কালীঘাটের একটি বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের জন্যও কুন্তলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন সায়নী। কুন্তলের দাবি, ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে তাঁকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া, টলিউডের এক অভিনেতাকেও অনুষ্ঠানের জন্য কুন্তল টাকা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।
এদিন আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কুন্তল ঘোষ দাবি করেন, ‘‘কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। কোনও লেনদেন হয়নি। সায়নীকে রাজনৈতিক ভাবে হেনস্থা করার জন্য ডেকেছে ইডি। আমার অনেক অনুষ্ঠান সায়নী করেছিল। সে সবই ছিল সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠান। কালীঘাটেও তেমন একটি অনুষ্ঠানে সায়নী ছিল।’’ তিনি আরও বলেন, একটি পানশালা উদ্বোধনের জন্য বলিউডের এক অভিনেত্রীকে কুন্তল নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তবে সেই অনুষ্ঠানটি পরে আর হয়নি। তা সত্ত্বেও টাকা ফেরত পাননি বলে দাবি কুন্তলের। তাঁর প্রশ্ন, ওই অভিনেত্রীকে কেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকছে না ইডি?
রাজ্য নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে। কুন্তল ঘোষের সূত্র ধরে উঠে এসেছে সায়নীর নাম। কুন্তলের সঙ্গে তাঁর কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত শুক্রবার সায়নীকে তলব করা হয়েছিল ইডি দপ্তরে। সে দিন টানা প্রায় ১১ ঘণ্টা তাঁকে জেরা করা হয়। রাতে সিজিও থেকে বেরিয়ে সায়নী জানিয়েছিলেন, তদন্তের স্বার্থে তিনি ১০০ বার ইডির সামনে হাজির হতে রাজি আছেন। তিনিই জানিয়েছিলেন, বুধবার তাঁকে আবার ডাকা হয়েছে। তিনি যাবেন। কিন্তু যাবেন বলেও বুধবার ‘ভোটের ব্যস্ততা’র কারণে সিজিও-তে যাননি সায়নী। আইনজীবী মারফত নথি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে।