গাজোল: ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে এক মদের দোকানের ম্যানেজারকে গুলি করার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গাজোলে। বৃহস্পতিবার রাতে আলাল থেকে দোকান বন্ধ করে টাকা পয়সা নিয়ে একটি স্কুটিতে করে ফিরছিলেন ওই দোকানের ম্যানেজার এবং অপর আরেকজন। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের মাতইল এলাকায় তাঁদের ঘিরে ধরে তিনটি বাইকে করে আসা ৬ জন দুষ্কৃতী। তাঁদের লক্ষ্য করে পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। দুটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। একটি গুলি এসে লাগে ম্যানেজার চিন্ময় বারুইয়ের পিঠে। এরপর দুষ্কৃতীরা টাকার ব্যাগ মনে করে অন্য একটি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই দোকান মালিকের ছেলেকে ফোন করেন চিন্ময়বাবু। ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে আসা হয় গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে চিন্ময় বাবুকে নিয়ে আসা হয় মালদার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। দুপুর বেলা সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান চিন্ময় বাবু।
দুষ্কৃতী দলকে চিহ্নিত করতে গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ। এদিন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে লাগানো পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরা সহ অন্যান্য বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এছাড়াও বিভিন্ন সূত্র ধরে দুষ্কৃতী দলকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ১৮ বছর ধরে ওই মদের দোকানের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন চিন্ময় বারুই। প্রতিদিনই রাত ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে টাকা পয়সা মালিকে দিয়ে বাড়ি ফিরতেন। ঘটনার দিনও দোকানকর্মী প্রসেনজি৻ মুদির স্কুটারে ৭৩ হাজার টাকা নিয়ে ফিরছিলেন। পথেই তাঁর উপর হামলা চলে।
মদের দোকানের মালিক আনন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় আমার ছেলে। তাঁদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে আসা হয় গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু তাঁর রক্তচাপ অস্বাভাবিক থাকায় অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নিতে চাননি চিকিৎসকেরা। এদিন তাকে স্থানান্তর করা হয়, মালদার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই মারা যান চিন্ময়।’ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত। তার বক্তব্য, গোটা রাজ্যের সাথে মালদাতেও এখন দুষ্কৃতীরাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর সফর চলাকালীন মালদা শহরে এক ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে গেছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার এই শুট আউটের ঘটনা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল রাত থেকেই গাজোল থেকে আলাল পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে পুলিশ। এছাড়াও আরও বেশকিছু সূত্র ধরে চলছে।