শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: এবার সরাসরি ভোটের (Lok Sabha Election 2024) ময়দানে নামল আদিবাসীদের ৮টি মিলিত সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ষষ্ঠ তফশিল কোঅর্ডিনেশন কমিটি (ডুয়ার্স-তরাই)। আলিপুরদুয়ার আসনে নিজেরাই প্রার্থী দিয়েছে সংগঠনটি। জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) প্রার্থী না দিলেও কোনও রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সমর্থন করা হবে। দার্জিলিং (Darjeeling) আসন নিয়েও নিজেদের অবস্থান দ্রুত স্পষ্ট করা হবে বলে মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) আসনে ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মাদারিহাটের পরিমল ওরাওঁ। সবমিলিয়ে উত্তরের ৩ আসনের লড়াইকে ঘিরে এখন কৌতূহলের পারদ ক্রমশ চড়তে শুরু করেছে। যৌথ মঞ্চের শরিক সংগঠন ভারতীয় মূলনিবাসী আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সভাপতি রাজেশ লাকড়া (টাইগার) সদ্য তৃণমূল ছেড়েছেন। তিনি বলছেন, ‘ডুয়ার্স-তরাইকে দ্রুত ষষ্ঠ তফশিলের আওতায় আনাই প্রধান নির্বাচিন ইস্যু। সর্বত্র ব্যাপক সাড়া মিলতে শুরু করেছে।’
আলিপুরদুয়ার আসনটি যেহেতু বাগান অধ্যুষিত সে কারণে এখানে চা শ্রমিকদের ভোট বরাবরই নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি কিংবা দার্জিলিং আসনের ক্ষেত্রেও বাগানের ভোট যে কোনও প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে। এখন দেখার আদিবাসীদের ওই যৌথ মঞ্চ নিজেরাই নির্বাচনে দাগ কাটছে নাকি অন্যতম দুই প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস বা বিজেপির ভোট কেটে যে কোনও একজনের যাত্রাভঙ্গ করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সঞ্জয় কুজুরের বক্তব্য, ‘আদিবাসীদের অধিকার একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসই দিয়েছে। তাই এনিয়ে বিশেষ কিছু ভাবার নেই।’
যৌথ মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, ডুয়ার্স-তরাইকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করাই তাঁদের মূল নির্বাচনি অ্যাজেন্ডা। আদিবাসী গ্রামসভা নামে মঞ্চের শরিক সংগঠনের সভাপতি চন্দন লোহরার কথায়, ‘সবক’টি রাজনৈতিক দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ডুয়ার্স-তরাইয়ের অনুন্নয়নের কথা সংসদে তুলে ধরতে ব্যর্থ। এবারে তাই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের অধিকারকে ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াই।’
যৌথ মঞ্চ জানিয়েছে, যে ৮টি সংগঠন একছাতার তলায় এসেছে সেগুলির মধ্যে রাজেশ কিংবা চন্দনদের সংগঠন ছাড়াও রয়েছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ (খোকন সর্দার গোষ্ঠী), উত্তরবঙ্গ আদিবাসী বিকাশ পরিষদ, অল আদিবাসী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, অল আদিবাসী স্টুডেন্টস ফ্রন্ট, ডুয়ার্স সাঁওতাল কালচারাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি ও অল ইউনাইটেড আদিবাসী লিবারেশন ফ্রন্ট। ফলে আদিবাসী ভোটব্যাংকে যে তারা অনেকটাই থাবা বসাবে তা একপ্রকার নিশ্চিত।
যদিও এই লড়াইকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না ঘাসফুল বা পদ্ম শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের প্রার্থী প্রকাশ চিকবড়াইক বলছেন, ‘ভোটে লড়ার অধিকার যে কারও রয়েছে। এটা নিয়ে কিছু বলার নেই। জয় নিয়ে একবিন্দুও সংশয় নেই।’
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা জয় নিয়ে প্রত্যয়ী। তাঁর কথায়, ‘কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে চিন্তা করছি না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আমাদের সংগঠনের জোরেই শুধু আলিপুরদুয়ার কেন, সব আসনেই জিততে চলেছি।’