সানি সরকার, শিলিগুড়িঃ আটের মধ্যে পাঁচ। তাহলে বাকি তিনের কী হবে? শনি সন্ধ্যার পর এই প্রশ্নই ঘুরছে বিজেপির অন্দরে। আলিপুরদুয়ারে মুখ পরিবর্তন হয়ে জন বারলার জায়গায় মনোজ টিগ্গার নাম ঘোষিত হওয়ায় রায়গঞ্জ, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়িতেও কি মুখের পরিবর্তন ঘটবে? আপাতত সেই চর্চায় মশগুল উত্তরের রাজনীতি। নিজের মতো করে খোঁজ নিচ্ছেন প্রায় প্রত্যেকেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে তিন জেলার সভাপতি ‘সম্পূর্ণ তালিকা ঘোষণা হয়নি’ অভয় দিলেও, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অসম্পূর্ণ তালিকা টেনশনে ফেলে দিয়েছে তিন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, রাজু বিস্ট এবং জয়ন্ত রায়কে।
তবে তিনজনই এখনই ‘বেসুরো’ হতে নারাজ। চেষ্টা করছেন ‘ভেঙে পড়িনি’ মনোভাব বোঝাতে। যেমন রায়গঞ্জের সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী বললেন, ‘মাত্র তো ১৯৫ জনের নাম ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ২০ জনের। কিছুদিনের মধ্যে নিশ্চয়ই বাকিদের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে। আমার কোনও টেনশন নেই।’ নিজেকে আত্মবিশ্বাসী বোঝাতে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট বলছেন, ‘ঘাবড়ানোর কিছু নেই। বাংলার ৫০ শতাংশের বেশি নাম ঘোষণা এখনও বাকি।’ জলপাইগুড়ির জয়ন্তর বক্তব্য, ‘শুনেছিলাম এদিন সকালে নাম ঘোষণা হবে। সেখানে সন্ধ্যায় হল। নিশ্চয়ই বাকি নাম কিছুদিনের মধ্যে হবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এদিন বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করতেই সকলের নজর ছিল মূলত দার্জিলিংয়ে। বিজেপি প্রথা ধরে রাখবে, না ভাঙবে- তা জানতে সাধারণ মানুষ থেকে দলীয় কর্মী, এমনকি বিরোধীরাও কৌতূহলী ছিলেন। ২০০৯ থেকেই দার্জিলিং কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করে আসছে বিজেপি। তার মধ্যে এবার আসরে আগেই নেমে পড়েছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও দার্জিলিংয়ের প্রার্থী নিয়ে দোটানায় কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরছে দার্জিলিং পাহাড় থেকে সমতলে।
জেলা কমিটি থেকে জয়ন্তর নাম পাঠানো হলেও জলপাইগুড়িতে কানাঘুষো শুরু হয়েছে একাধিক নাম নিয়ে। সেই তালিকায় রয়েছেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়ও। ধূপগুড়ির ছেলে সৌমেনের অনুগামীরা সেটাই বোঝাতে চাইছেন।
রাজ্য স্তরের এক নেতার কথায়, ‘নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই তিন কেন্দ্র নিয়ে দ্বিতীয় ভাবনা রয়েছে। না হলে নাম ঘোষণা হবে না কেন? তালিকায় দিলীপ ঘোষের নাম না থাকাটাও তাৎপর্যের।’