সপ্তর্ষি সরকার, ধূপগুড়ি: রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুসারে আগামী পয়লা বৈশাখ পালিত হতে চলেছে প্রথম ‘রাজ্য দিবস’। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলা দিবস’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটিকেও রাজ্য সংগীতের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগানে ঢেউ তুলেছিল তৃণমূল। এবার বাংলা দিবসকে ঘিরে ফের বাঙালি আবেগকেই হাতিয়ার করতে চাইছেন দলের ভোট ম্যানেজাররা।
বাংলা দিবস পালনে যেমন প্রশাসনিক নির্দেশিকা আসছে তেমনি আলাদা করে দলকেও মাঠে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ধূপগুড়ি পুর প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিং বলেন, ‘বিবিধের মাঝেও মিলন মহান আমাদের বাংলায়৷ সেই আবহেই দিনটি পালিত হবে। পুরসভার তরফ থেকে আমরা বর্ণময় আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সমবেতভাবে রাজ্য সংগীত গাওয়া, মানববন্ধন, বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং শহিদদের নিয়ে আলোচনা সহ বাঙালি আবেগ ছুঁয়ে যাওয়ার সমস্ত কর্মসূচিই রাখতে বলা হয়েছে দলকে। তৃণমূল নেতারা মুখে সরকারি কায়দায় অনুষ্ঠানের কথা শোনালেও সূত্রের খবর বাংলা দিবস পালন নিয়ে তৃণমূল নেতাদের ‘গাইড’ করছেন পরামর্শদাতা সংস্থার আধিকারিকরা। আলাদা করে প্রচার, লিফলেট এবং স্টিকারও তৈরি। বাংলা দিবসের লিফলেট এবং স্টিকার নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারের কৌশল নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে। বলাবাহুল্য, বাড়ি বাড়ি প্রচারের সেই পরিকল্পনায় বিজেপিকে ‘হিন্দি বলয়ের বাঙালি বিরোধী দল’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। রাজনৈতিক ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন ছাড়া এই পরোক্ষ প্রচার কৌশল নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা ও ব্লক স্তরের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করে ফেলেছেন পেশাদার পরামর্শদাতা সংস্থার কর্মীরা।
এদিকে, ভোটের মুখে জাঁকজমক করে বাংলা দিবস পালনের উদ্দেশ্য নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব সিপিএমের ধূপগুড়ি এরিয়া কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘গত তেরো বছরে যারা বাংলার কয়লা থেকে বালি, চাকরি থেকে নারীর ইজ্জত চুরি করে বাঙালির মানসম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে, তাদের অধিকার নেই বাংলা দিবস পালন করার।’
পয়লা বৈশাখে প্রতিটি জেলা সদর সহ প্রতিটি ব্লকের মূল বাণিজ্যিক এলাকা, ভিড় হয় এমন বাজার বা গঞ্জ এলাকা এবং বিশেষ মোড়গুলোয় বাংলা দিবসের হরেক কর্মসূচি নিতে বলা হয়েছে। বাংলা দিবস নিয়ে তৃণমূলের জোর প্রস্তুতির মাঝেই বিজেপির ধূপগুড়ি বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক চন্দন দত্তের বক্তব্য, ‘বাংলার মেয়েদের ইজ্জতে হাত দেওয়া সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান সহ ভিনরাজ্য থেকে আমদানি করা তৃণমূল প্রার্থী ক্রিকেটার ও ফিল্মি অভিনেতাদের সামনে রেখেই বাংলা দিবস পালিত হোক।’