ধূপগুড়িঃ ছিলেন গৃহশিক্ষক, কিন্তু আচমকাই বদলে গেল ছাত্রীর মায়ের প্রেমিক। সেই সূত্রেই প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিল গৃহশিক্ষক প্রেমিক। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে ধূপগুড়ির বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। তবে ভিন রাজ্য থেকে ফিরতেই বছর তেইশের প্রেমিকের ঠাঁই হল শ্রীঘরে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক বছর থেকে যুবক গৃহশিক্ষকতার সূত্রে এলাকায় এক ছাত্রীকে টিউশন পড়াতেন। সেই থেকেই ছাত্রীর বছর আটত্রিশের মায়ের সঙ্গে নিয়মিত নানা বিষয় আলাপ চলত। আলাপের মাঝেই কখন সম্পর্ক প্রেমে পরিনত হয় তা দুই পরিবারের কেউই বুঝতে পারেন নি। গত ২০ দিন আগে প্রেমের সম্পর্ককে পূর্ণতা দিতে ছাত্রীর মাকে নিয়ে একেবারে ভিন রাজ্যে পালিয়ে যায় প্রেমিক যুবক। দুই পরিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে প্রেমিক প্রেমিকাকে ফিরে আসতে বলে। কথা মতো শুক্রবার রাতে দুজনে ধূপগুড়ি স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তখনই পরিচিতরা দেখে দুজনকে চিনে ফেলে এবং রাস্তাতেই আটকে দেয়। বাদানুবাদ থেকে ঝামেলা বাধে উভয়পক্ষের মধ্যে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনকে থানায় নিয়ে আসে৷ এরই মধ্যে প্রেমিকার স্বামী থানায় হাজির হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী বাড়ি ছাড়ার পর থেকেই স্বামী ও সন্তান মায়ের জন্যে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। তারাই গৃহশিক্ষকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং ফিরে আসতে বলে।
থানায় এসেও স্বামী তার স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। একইসঙ্গে স্ত্রীও স্বামীর কাছে ফিরতে চায় বলে জানায় পুলিশকে। সেই মতো লিখিত দিয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চলে যায়। তবে প্রেমিকাকে ছাড়া প্রয়োজনে জেলে যাবেন কিন্তু বাড়ি ফিরবে না বলে নাছোড়বান্দা প্রেমিক যুবক। এদিকে প্রেমিকের পরিবারও ছেলের কু-কর্মের দায়িত্ব নিতে নারাজ। খবর পেলেও পুলিশকে অনুরোধ তো দূর, ছেলের জন্যে থানায় যায় নি পরিবারের লোকেরা। বাধ্য হয়ে পুলিশ ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতে তুলবে বলেই জানিয়েছে।
গৃহশিক্ষকের এহেন কাণ্ডে নিন্দার ঝড় উঠেছে এলাকায়। অনেকেই জানাচ্ছেন, বিশ্বাস রেখেই বাড়িতে টিউশনে শিক্ষকদের ডাকা হয়। কিন্তু বিশ্বাসের অমর্যাদা করলে তা গ্রহনযোগ্য নয়। ধৃত যুবকও ভালো কাজ করে নি। ধূপগুড়ি থানার পুলিশও একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় বিরক্ত। নেহাত ছোট ঘটনা হলেও পুলিশ প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্যই করতে চায় নি। ধূপগুড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঝামেলা এড়াতে দুজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। পরিবার আসলে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হত। কিন্তু মহিলার পরিবার এসেছিল এবং তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলেটির পরিবার যোগাযোগও করে নি। থানা থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা আসে নি। অনেকেই দাবী করেছেন ছেলেটির পরিবার এবারে কর্মের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।