রাজু সাহা, শামুকতলা: বাবা, মা দুজনেই ছেড়ে চলে গিয়েছে আগেই। সংসারের অভাব মেটাতে সে নিজে তিন মাস আগে পিসির বাড়ি থেকে পালিয়ে পরিচারিকার কাজ করতে চলে গিয়েছিল সিকিম। গত মাস দুয়েক ধরে তার ঠিকানা কোচবিহার জেলার একটি হোম। এই অবস্থাতেই সেই কিশোরী স্রেফ মনের জোরে বসেছে মাধ্যমিকে (Madhyamik Exam 2024)।
শামুকতলা থানা (Shamuktala police station) এলাকায় সেই পরীক্ষার্থীর পিসির বাড়ি। সেখান থেকেই সে পালিয়েছিল। সিকিমে (Sikkim) কাজ করতে করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। ওই তরুণ তাকে ফুসলিয়ে বিয়ে করে। পরে সেই নাবালিকা নিজের ভুল বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশই তাকে উদ্ধার করে হোমে পাঠায়। কারণ সেই পিসি তাকে বাড়িতে রাখতে সম্মত হয়নি। এরপর মেয়েটি মাধ্যমিক দেওয়ার আবেদন জানায় হোম কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে বসেই সে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিয়েছে। বর্তমানে সে অবশ্য পিসির বাড়িতে থেকেই মাধ্যমিক দিচ্ছে।
শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায় জানান, মেয়েটি বাড়িতে থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চাইলেও তার আত্মীয়রা প্রথমে রাজি হয়নি। পরে আমরা আর হোমের লোকজন তাঁদের বোঝাই।’
এযাবৎ বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও ভূগোল পরীক্ষা সে ভালোই দিয়েছে। পুলিশ তার খোঁজখবর রাখছে। পড়াশোনায় যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, সেটা দেখছে। আর আপাতত বাড়ির লোকজনও সেই কিশোরীর পাশেই রয়েছে।
এনিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির আলিপুরদুয়ার জেলা চেয়ারম্যান অসীম দত্ত বলেন, ‘মেয়েটির পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখেই আমরা ওর পাশে দাঁড়িয়েছি। হোমে নয়, ওর জন্য বাড়িতে থেকে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’