নিউজ ব্যুরো: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত, এমনই মন্তব্য করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির(বিজেপি)প্রবীণ নেতা তথা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। মঙ্গলবার কলকাতায় এফআইসিসিআই(ফিকি)-র তরফে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি ওই মন্তব্য করেন। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি নেতার এমন মন্তব্যে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বর্তমানে বাংলায় তৃণমূল-বিজেপির সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। প্রায়ই কয়লা, গোরুপাচার, নিয়োগ দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুতে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্য নেতারা। এছাড়া সম্প্রতিক অতীতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাকেও তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে যখন দুর্নীতি ইস্যুতে শাসকদল ব্যাকফুটে, ঠিক সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন বিজেপিরই প্রবীণ নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। ফিকি-র অনুষ্ঠানে স্বামী বলেছেন, ‘মমতার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। তিনি একজন সাহসী মহিলা। দেখুন কীভাবে তিনি ৩৪ বছর ধরে কমিউনিস্টদের সঙ্গে লড়াই করেছেন।’
প্রবীণ বিজেপি নেতার সংযোজন, ‘আমি মনে করি, দেশে এমন বিরোধী থাকা প্রয়োজন, ক্ষমতাসীন দল যাদের ব্ল্যাকমেল করতে পারবে না এবং যারা শাসক দল (কেন্দ্রের)-কে ভয় পাবে না। আমি অনেক লোককেই জানি, যাঁরা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যাবেন না। কারণ তাঁরা ইডি বা অন্য কিছুর ভয় পান। এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। তবে মমতা এমন একজন যাঁকে ব্ল্যাকমেল করা অসম্ভব।’
তবে হঠাৎ দলীয় অবস্থানের বিপরীতে গিয়ে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর মুখে মমতার প্রশংসার পেছনে অন্য কারণ দেখছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, এর আগে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরোকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিছুদিন আগে সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ফেলেইরো। সেই পদ বর্তমানে ফাঁকাই রয়েছে। আবার ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন স্বামী। বর্তমানে দলের সঙ্গে যে তাঁর কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্যেই স্পষ্ট। ফের রাজ্যসভার টিকিট পেতেই কি মমতা-স্তূতি? এমনই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।