কালিয়াগঞ্জ: ফের বক্তৃতায় আগুন ঝরালেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। পঞ্চবাণে বিদ্ধ করলেন রাজ্য সরকারকে। সদ্য ঘটে যাওয়া তিনটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তীর্যক মন্তব্য করলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জে জনসমাবেশ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে মীনাক্ষী বলেন, ‘কারও বেটা অডি গাড়িতে চড়ে তাঁবুতে তাঁবুতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেখানে, এক বাবা তাঁর মৃত সন্তানকে ব্যাগে করে মেডিকেল কলেজ থেকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে হচ্ছে। রাজ্যের হাসপাতালগুলো এখন রেফার সেন্টারে পরিণত হয়েছে। একটি শিশুর মুখে ঘা নিয়ে তাঁর মাকে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সেখান থেকে রায়গঞ্জ, তারপর রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি রেফার করা হচ্ছে শিশুটিকে। রাজ্যজুড়ে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে সিন্ডিকেট রাজ চলছে। তৃণমূলের বাবুরা বিনা পয়সায় অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিচ্ছেন। সেখানে একজন গরীব বাবার কাছে আট হাজার টাকা ভাড়া দাবি করা হচ্ছে।’
রাধিকাপুরে মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের কথা বলতে গিয়ে রাজ্যের লালঝান্ডার উদীয়মান যুবনেত্রী মীনাক্ষী বলেন, ‘পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে মৃত্যুঞ্জয়কে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পুলিশ সেদিন অনায়াসে মৃত্যুঞ্জয়কে ধরে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে পারত। তাহলে তিনি বেঁচে যেতেন। কিন্তু, তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পুলিশরা কি মৃত্যুঞ্জয়ের বৌয়ের আর্তনাদ শুনতে পান না?’
কালিয়াগঞ্জের নাবালিকার কথা প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন, ‘নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে আসতেই কোনও জনপ্রতিনিধি বলে দিলেন যে, ঘটনায় অভিযুক্তরা আত্মসমর্পণ করেছে। নাবালিকার পোস্টমর্টেম না হতেই কোন এক পুলিশ অফিসার পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট দিয়ে দিলেন। ওই পুলিশ আধিকারিক কত বড় ডাক্তারের বাপ হয়েছেন সেটাই এবার দেখতে হবে। সমস্ত ঘটনার আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। চাই, মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের একজনকে চাকরি দিক রাজ্য সরকার।’
এদিন কালিয়াগঞ্জের মৃত নাবালিকা, ডাঙ্গিপাড়ার মৃত শিশুর পরিবার এবং রাধিকাপুরে যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবার সঙ্গে দেখা করে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন পাঁচটি সংগঠনের নেতৃত্বরা। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন রাজ্য গণতান্ত্রিক মহিলা সংগঠনের সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ, এসএফআইয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা নবনীতা চক্রবর্তী, আদিবাসী অধিকার মঞ্চের তরফে পুলিন বিহারী বাস্কে, সামাজিক ন্যায় মঞ্চের পক্ষ থেকে তাপস সরকার সহ অনান্য দলীয় নেতৃত্ব। এদিন দুপুরে শহরের টায়ার কোম্পানি এলাকা থেকে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্যের দাবিতে দলীয় কর্মী ও নেতৃত্বের সঙ্গে মিছিলে হাঁটেন মীনাক্ষী। মিছিল শেষে কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যু ও মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যুর ন্যায় বিচারের দাবিতে জন সমাবেশে যোগ দেন তিনি।