কোচবিহার: পরস্পপরের বিরুদ্ধে বেনজির আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জড়িয়ে পড়লেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহু ও পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিখিল চন্দ্র রায়। এদিন, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন করতে গিয়ে উপাচার্যকে উপস্থিত দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন উদয়ন গুহ(Udayan Guha)। মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নিখিলচন্দ্র রায় এখানে উপাচার্য থাকাকালীন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক পয়সাও সরকারি অনুদান দেবেন না।’ এছাড়াও উপাচার্যকে কার্যত বয়কট ঘোষণাও করেন তিনি। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিখিল চন্দ্র রায়ের(Nikhil Chandra Roy) দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় শুক্রবার যে এই অনুষ্ঠান ছিল সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তাঁকে কেউ কোনওরকম আমন্ত্রণ করেননি। এমনকি কলকাতা থেকে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছেও অনুষ্ঠানের বিষয়টি তিনি জানতে চেয়েছেন, কিন্তু তিনিও তাঁকে বলেছেন এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। উপাচার্যের দাবি, কোনওরকম আমন্ত্রণ ছাড়া অনুষ্ঠানে একজন উপাচার্য কীভাবে উপস্থিত থাকেন? উপাচার্যের কি কোনও মান-সম্মান নেই?
এদিনের অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর সঙ্গে কোচবিহার(Cooch Behar) পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া সহ বিভিন্ন পদাধিকারীরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে উপাচার্য সহ অধ্যাপক ও পধাধিকারীদের প্রায় কাউকেই না দেখতে পেয়ে মেজাজ সপ্তমে ওঠে মন্ত্রীর। এরপরই ভাষণে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানে উপাচার্যের আমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু তিনি নিজেও আসেননি, অন্যদেরকেও আসতে দেননি। আসলে উনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন রাজ্যপালের হাত ধরে। তিনি এখানে একটা রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন। এখানে উপস্থিত যাঁরা আমার সহকর্মী রয়েছেন দপ্তরের কর্মী আধিকারিক রয়েছেন, তাঁদের আমি অনুরোধ করব এরপর থেকে কোচবিহারে কোনও সরকারি কর্মসূচিতে যাতে এই উপাচার্যকে আমন্ত্রণ জানানো না হয়।’
তবে মন্ত্রীকে ছেড়ে কথা বলেননি উপাচার্যও। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী উদয়ন গুহ এর আগেও রাজবংশীদের হাঁটু ভাঙ্গার কথা বলেছিলেন। উনি আসলে রাজবংশী বিদ্বেষী। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি মনীষী পঞ্চানন বর্মার নামে। যিনি রাজবংশী জাতির জনক। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যেই হোক না কেন তাঁর প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান যিনি জানাতে পারেন না। তিনি পঞ্চানন বর্মাকে সম্মান জানাবেন কি করে।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের টাকা সরকারি তহবিলের টাকা। কারও কোন ব্যক্তিগত টাকা নয়। সেখানে উনি কিভাবে হুমকি দেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আর এক টাকাও বরাদ্দ করা হবে না। উনি কি এটা বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলতে পারবেন? এই উদ্ধত্য উনি দেখাতে পারেন কি করে? ’ রাজ্যপালের হাত ধরে তার আসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘উনি বিধায়ক হয়ে শপথ নিয়েছেন কার হাত ধরে? বলার সময় এগুলো মনে থাকে না তাদের। এত মূর্খতো আমি ভাবিনি তাঁকে।’