শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা বাতিলের দাবি তুলে শুভঙ্কর দে নামে কোচবিহারের এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পালটা হলফনামা জমা করলেন। ইতিমধ্যেই তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে পালটা হলফনামা জমা করেছেন। সেটি কমিশনের ওয়েবসাইটেও দেখা যাচ্ছে। শুভঙ্করের দাবি, নিশীথ তাঁর হলফনামায় নিজের সম্পত্তি ও আর্থিক সম্পদ নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
নিশীথের ছায়াসঙ্গী দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের বক্তব্য, ‘যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেন তো করুন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া যে হলফনামা দিয়েছেন সেখানে তাঁর পারিবারিক অনেক সম্পত্তির কথা উল্লেখ নেই। আমরাও অভিযোগ করব।’ এবিষয়ে জগদীশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিশীথ প্রামাণিকের হলফনামা ও তার পালটা হলফনামার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখুক।’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের বক্তব্য, ‘মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বেশি দূর যাওয়া যায় না। মিথ্যেবাদীদের মুখোশ একসময় ঠিকই খুলবে।’ একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া না দেওয়ায় জেলা শাসকের বক্তব্য মেলেনি।
ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিতে হয়। সেখানে প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তি, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার পরিমাণ, সোনার পরিমাণ, পুলিশে মামলা সংক্রান্ত তথ্য সহ আনুষঙ্গিক সমস্ত কিছুর উল্লেখ রাখতে হয়। বিজেপি প্রার্থী নিশীথও সেরকমই হলফনামা জমা করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নিশীথের হলফনামা জমার পর ২৭ মার্চ শুভঙ্কর পালটা হলফনামা জমা করেন। যেখানে নিশীথের হলফনামায় থাকা আর্থিক সম্পদ ও সম্পত্তির হিসেবে অসংগতি রয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তিনি জানিয়েছেন। অভিযোগকারী শুভঙ্কর কোচবিহার-২ ব্লকের বঞ্চুকামারির বাসিন্দা। তিনি এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিত। তবে এ বিষয়ে শুভঙ্করের কোনও বক্তব্য মেলেনি।
নিশীথ তাঁর হলফনামায় ভুল তথ্য দিয়েছেন কি না তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। তবে নির্বাচন কমিশনে নিশীথের হলফনামার পালটা হলফনামা জমা পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই জেলার রাজনীতিতে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। লোকসভা ভোটের জন্য হাতেগোনা কয়েকটি দিন বাকি রয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলায় হেভিওয়েট নেতাদের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে আসবেন। প্রচার যখন তুঙ্গে তখন হলফনামার ইস্যুতে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ আরও চড়ছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই সবার নজর।