সপ্তর্ষি সরকার, ধূপগুড়ি: হালের ফাইভজি যুগের শিশুরা স্বাদ না জানলেও আট-নয়ের দশকে জন্মানো এমন মানুষ খুঁজে মেলা ভার, যাঁরা বার্লি না খেয়ে বড় হয়েছেন। খাওয়ার চল যেমন কমেছে, তেমনি সারা দেশেই কমেছে বার্লি চাষও। এর অন্যতম কারণ অবশ্যই বার্লির কম ফলন এবং রোগ আক্রান্ত হওয়া। সেই বার্লির চাষ বাড়াতে গাছের পাতার স্পট ব্লজ রোগ খুঁজে দেশের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে স্বর্ণপদক পেলেন ধূপগুড়ির পৌলোমী। আপাতত দেশের অন্যতম সেরা কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গবেষণায় মগ্ন পৌলোমী বসাক।
ধূপগুড়ি শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্য সেন কলোনি এলাকার বাসিন্দা পেশায় চা বাগানের কর্মী প্রকাশ বসাকের মেয়ে পৌলোমী ২০২১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে স্নাতক হয়ে সর্বভারতীয় প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি হন দেশের সেরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে এমএসসি করার সময় তাঁর গবেষণাপত্র ছিল প্ল্যান্ট প্যাথলজির ওপর বার্লি পাতার রোগ নিয়ে৷ সেই গবেষণাপত্র তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেরা হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় পৌলোমীর হাতে ওঠে রাষ্ট্রপতির পদক। ছোটবেলায় বিন্নাগুড়ির একটি বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে পৌলোমীর পড়াশোনা। ফলে একেবারে ছোট থেকেই বাড়ি থেকে দূরেই শিক্ষার জন্যে তাঁর দৌড়াদৌড়ি। বর্তমানে তিনি প্ল্যান্ট প্যাথলজিতেই তঁার গবেষণা আরও এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। এদিন দিল্লি থেকে ফোনে পৌলোমী বলেন, ‘বার্লি এবং গম চাষের সময়টা প্রায় একই হয়ে যাওয়ায় বার্লি চাষে আগ্রহ কমছে। উপরি হিসেবে বার্লি গাছের রোগ এবং তার জেরে ফলনে মার হওয়া। আশা করব সেই ফলন বাড়াতে এই গবেষণা কাজে লাগবে।’
চলতি মাসের ৯ তারিখ দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৬২তম সমাবর্তন উপলক্ষ্যে হাজির ছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তিনিই গবেষণার জন্যে স্বর্ণপদক তুলে দেন পৌলোমীর হাতে। মেয়ের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা প্রকাশ বসাক বলেন, ‘ছোট থেকেই শান্ত মেয়েটি পড়াশোনার প্রতি খুব টান৷ আমরা চাইব ওঁর গবেষণা দেশ ও মানুষের কাজে লাগুক।’