জয়গাঁ: দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ দলসিংপাড়া চা বাগান। কাজ হারিয়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছে শ্রমিকদের জীবন। এবার সেই বন্ধ বাগানে নতুন আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন সুমিত তিরকি, রবি কেরকাট্টা, বুধু ওরাওঁ, আকাশ মুন্ডাদের মতো তরুণরা। দলসিংপাড়া চা বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে আনারস চাষ করছেন তাঁরা। এই চাষে পেয়েছেন আশানুরূপ সাফল্যও।
বাগান বন্ধ থাকায় জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে দিনমজুরের কাজ করছিলেন শ্রমিক পরিবারের অনেকেই। কিন্তু সেই কাজে বেতন অনেক কম। সংসার কীভাবে চলবে? এই ভাবনা থেকেই বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজতে আনারস চাষের কথা মাথায় আসে তাঁদের। সুমিতের কথায়, ‘আমরা আনারস গাছ রোপণ করিনি। ফলের উপরের যে অংশটি খাওয়ার সময় ফেলে দেওয়া হয় সেটাই রোপণ করেছিলাম। বেশি কাদামাটিতে রোপণ করিনি। জলও খুব বেশি দিতাম না। মাঝেমধ্যে কেবল গোবর সার দিতাম গাছের গোড়ায়। এখন দেখছি গাছগুলিতে ফল আসছে। এবারে পরিপূর্ণ ফল পেলে, আগামীতে বাড়ির বাগানে চাষ করব।’
সুমিত, রবি, বুধুদের পরিবার এতদিন চা বাগানের ওপরেই নির্ভরশীল ছিল। তাঁদের পরিবারের কেউ না কেউ কাজ করতেন দলসিংপাড়া চা বাগানে। বাগান বন্ধ থাকায় কারও হাতে কাজ নেই। দিনমজুরের কাজ করেই কাটছে দিন। তবুও সে কাজ প্রতিদিন থাকে না। তাই চার বন্ধু মিলে ঠিক করেন পরীক্ষামূলকভাবে আনারস চাষ করবেন। এই ভাবনা থেকেই তাঁরা পুজোর আগে পনেরোটি গাছ রোপণ করেছিলেন। এরমধ্যে বারোটি গাছ বেড়েছে। বাকি গাছগুলি মারা গিয়েছে। ইতিমধ্যে সেই গাছগুলিতে ফলও আসতে শুরু হয়েছে। সুপারি গাছের পাশেই এই গাছগুলি রোপণ করেছিলেন তাঁরা।
অনাদরেই গাছগুলি বেড়েছে বলে জানান ওই চার তরুণ। আদতে আনারস চাষ কীভাবে হয় তা তাঁরা জানেনই না। এ বিষয়ে আকাশ বলেন, ‘পরিপূর্ণ ফল পেলে এবার সেগুলি বাজারে বিক্রি করব। কিছু টাকা নিশ্চয়ই আসবে। আমরা এরপর ইউটিউব দেখে চাষ শুরু করব। যদি লিজে জমি নিয়ে চাষ সম্ভব হয়, সেটাও করব।’