জয়গাঁ: জয়গাঁ ১ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বড়ো মেচিয়াবস্তি বস্তির যে ময়দানে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নির্বাচনি জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই মাঠের এক পাশে রয়েছে তোর্ষা চা বাগান। আরেক পাশে বস্তি। স্বাভাবিক ভাবেই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জনসভায় চা বাগান নিয়ে কিছু বলেন কিনা তা নিয়ে রবিবার দুপুর থেকে অনেকেই মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রায় আধঘণ্টার ভাষনে একটি শব্দও চা বাগানের জন্য খরচ করেননি। এমনকি বনবস্তি নিয়েও তাঁর মুখে কোনও কথা শোনা যায়নি। সভা শেষে তাই বিভিন্ন চা বাগান থেকে আসা বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা দেখা গিয়েছে।
রাজনাথের বক্তব্যে বরং স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ইস্যু। বক্তব্যে অবশ্য রাজ্যের শাসক দলকে ছেড়ে কথা বলেননি বিজেপিতে ‘সুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রাজনাথ সিং। সমর্থকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেছেন এবার লোকসভা নির্বাচনে ৪০০ আসন পেলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আর বিজেপি রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় এলে র্যাশন দুর্নীতি, শিক্ষা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজনাথ। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য বলেন, ‘সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটছে, আর আপনারা কিছুই জানতে পারছেন না এটা হয় নাকি।’ এছাড়াও মোদি সরকার রাজ্যের জন্য ভালো কিছু করতে চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাধা দেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। মোদির ভালো কাজকে মুখ্যমন্ত্রী কখনই মেনে নিতে চান না বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বক্তব্য হিন্দি ভাষায় রাখলেও শুধুমাত্র একটি কথাই বাংলায় বলেন ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চান, মোদির সব কাজেই দোষ খোঁজেন মমতা। দেশের অর্থনীতি ১১ নম্বর থেকে গত ১০ বছরে ৫ নম্বরে আসা, করোনা অতিমারির টিকা প্রদানে বিশ্বে ভারতের আলাদা জায়গা করে নেওয়া, রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে পড়ুয়াদের উদ্ধার করে আনা, বিদেশের মাটিতে সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ অবসরপ্রাপ্ত নৌ সেনা আধিকারিককে রক্ষা করার মতো আন্তর্জাতিক বিষয় তিনি তুলে ধরেন। ভারত যে প্রয়োজনে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে পারে তা মোদি সরকার দেখিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। এদিন নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় দু ঘন্টা দেরিতে হাসিমারা বায়ু সেনা ঘাঁটি থেকে সড়ক পথে সভাস্থলে আসেন রাজনাথ। সভায় সেভাবে জনসমাগম হয়নি। কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা বলেন, ‘একদিন আগে জনসভার নির্দেশ আসে। তাই এত দ্রুত অন্য এলাকায় মাঠের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।’