পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আগে রাজ্যজুড়ে জাগরণ যাত্রা শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (RSS Jagran Yatra)। কোন এলাকার ভোটাররা ভোট বয়কট করতে পারেন, বিজেপি (BJP) বা রাজ্যের শাসকদলের (TMC) কোন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ভোটারদের কী ধরনের অভিযোগ ও ক্ষোভ রয়েছে এই যাত্রার মধ্য দিয়ে তার খোঁজ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে এই যাত্রা আজ থেকে শুরু হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের লোকসভা কেন্দ্রগুলির অধীন সবক’টি বিধানসভা কেন্দ্রেই সংঘ এই যাত্রা শুরু করতে চলেছে। ভোট বয়কটের সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনে স্থানীয় দলীয় জনপ্রতিনিধিকেও ভোটারদের সামনে ডাকা হবে। সংঘের রাজ্য স্তরের কার্যনির্বাহী সদস্য ভূষণ দেবনাথ জানান, তাঁদের এই জনসংযোগের মূল উদ্দেশ্যই হল কোথাও যেন কেউ ভোট বয়কট না করেন। একটি ভোটও তাঁরা নষ্ট হতে দেবেন না। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক জনপ্রতিনিধি নিজের তহবিলের টাকা খরচ করে, উন্নয়নের কাজ করেননি। অন্যদিকে, নীচুতলার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভোটারদের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে। তাঁদের দম্ভ ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলছে বলে ভূষণ জানান। তিনি বলেন, ‘এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে ভোট বয়কট করবেন তা হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে সেই দলীয় জনপ্রতিনিধিকে ভোটারদের সামনে ডেকে আনা হবে। তিনি কেন উন্নয়নের কাজ করেননি সেই কৈফিয়ত দিতে হবে।’
সংঘের এই যাত্রা শুরুর আগে সারা রাজ্যজুড়ে ৫ হাজার ২৩৮টি গ্রাম চিহ্নিত করেছে সংঘের টিম। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গে ৩৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে দেড় হাজার গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই গ্রামগুলির মধ্যে বিজেপি, তৃণমূল, বামেদের দখলে থাকা পঞ্চায়েত রয়েছে। সংঘের এই সমীক্ষা গত একবছর ধরে করা হয়েছিল। তাতে গ্রামগুলি থেকে বঞ্চনার একাধিক বিষয় উঠে আসে। দলীয় ও বিরোধী দলের বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। জেলা স্তরের শীর্ষ নেতারা ব্লক পর্যায়ে ৫০ জন সদস্য নিয়ে টিম বানিয়েছেন। প্রতিটি বুথে দুজন করে কর্মী থাকবেন যাঁরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনবেন। তবে কোনও রাজনৈতিক মুখকে এই কাজে রাখা হচ্ছে না।
ভোট মানুষের কাছে উৎসবের সমতুল্য। কিন্তু বছরের পর বছর এলাকার অনুন্নয়ন, প্রত্যেক ভোটে গোলমাল, খুনোখুনি, রক্তপাত দেখে মানুষের মধ্যে উৎসাহ কমে যাচ্ছে। ভূষণের কথায়, ‘এইসব বিষয়ের বাইরে বিজেপি যাঁকে প্রার্থী করে জিতিয়ে এনেছিল, সেই ব্যক্তি যদি কাজ না করে থাকেন, তাঁর প্রভাব যদি লোকসভার মতো বড় ভোটে পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সেই দলীয় প্রতিনিধিকে আমরাই শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’