ভাস্কর বাগচী, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরে ষাঁড়ের (Bull) উৎপাতে অনেক সময়ই তটস্থ হয়ে থাকতে হয় নাগরিকদের। আবার রাস্তায় বেরিয়ে অনেক সময় ষাঁড়ও জখম হয়। এই পরিস্থিতিতে এবার ‘মুশকিল আসান’ হয়ে এগিয়ে এসেছে মালবাজারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শিলিগুড়ি থেকে ষাঁড় তুলে নিয়ে গিয়ে মেটেলির (Matelli) কাছে শালবাড়ি এলাকায় রাখার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। সেখানেই দেখাশোনা করা হবে ষাঁড়দের।
হাটেবাজারে দাপিয়ে বেড়ানো ষাঁড়ের উৎপাতে রীতিমতো নাজেহাল শহরবাসী। তারা কখনও রাস্তার উপর সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার কখনও খাবারের খোঁজে বাজারের ভিতর ঢুকে পড়ে মানুষকে জখম করে। আবার এর উলটো ঘটনাও ঘটে। খাবারের খোঁজে বেরিয়ে অনেক সময় ষাঁড়ও জখম হচ্ছে। তাদের নিয়মমতো চিকিৎসাও হয় না। সবসময় পেটপুরে খাবারও জোটে না। ওই সংগঠনের প্রস্তাবমতো কাজ হলে সব সমস্যা মিটতে পারে বলে আশাবাদী পুর কর্তৃপক্ষ।
শিলিগুড়ি শহরে ষাঁড়ের উপদ্রব কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। যার ফলে প্রতিদিন কমবেশি দুর্ঘটনার খবর আসছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মালবাজারের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগম। ঠিক হয়েছে, পুলিশের নজরে নিয়ে এসে প্রতিটি ষাঁড়কে গাড়িতে তোলার আগে ভিডিও রেকর্ডিং করা হবে। এরপর মালবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে।
মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একটা ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসা হবে। পুলিশের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’
এই কাজে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে। কারণ শহরের আনাচে-কানাচে থাকা ষাঁড়গুলি অনেকসময় অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকে। চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা হয় না। যার ফলে অনেকের পা পচে যায়, অনেকের পা কাটা পড়ে। অনেকের আবার শরীরে ক্ষত তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির নজরে পড়লে তাঁরা চিকিৎসা করান ঠিকই। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই নজরদারির অভাবে ষাঁড়ের উপযুক্ত চিকিৎসা হয় না।
মালবাজারের ওই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই পশুদের নিয়ে এধরনের কাজ করে আসছে। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ রান্ডার জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে ডুয়ার্স থেকে তুলে আনা প্রায় ৩০০ ষাঁড় ও মোষের চিকিৎসা চলছে আমাদের তত্ত্বাবধানে। ’
শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাসিন্দা মঞ্জুরানি পাল কিছুদিন আগেই হাকিমপাড়া দিয়ে যাওয়ার সময় ষাঁড় তাঁকে গুঁতো দেয়। পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব মঞ্জুরানি। তিনি এদিন বলেন, ‘আমি এখন ভালো করে হাঁটতে পারি না। জানি না কবে ভালো করে হাঁটতে পারব।’ সত্তরোর্ধ্ব ধীরেন্দ্রনাথ সিংহকে বিধান মার্কেট এলাকায় একটি ষাঁড় পিছন দিয়ে ধাক্কা মারায় উলটে পড়ে গিয়ে দাঁত ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। ওই সংগঠনের প্রস্তাব কার্যকরী হলে এমন ঘটনার সংখ্যা কমবে বলেই আশা।