সানি সরকার, শিলিগুড়ি: ধোঁয়ায় চোখ জ্বলছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। রবিবার পরিস্থিতি এমনই হল যে, রাতে ঘরের বাইরে থাকার সাহস দেখাতে পারেননি কেউই। গরমের মধ্যে দরজা, জানলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলেন শহরবাসী। শিলিগুড়ির (Siliguri) চয়নপাড়া থেকে দেশবন্ধুপাড়া, শালুগাড়া থেকে সূর্যনগর, শহরের অধিকাংশ মানুষ দমবন্ধ পরিস্থিতিতে খুঁজেছেন ধোঁয়ার উৎস। তাহলে কি শুখা মরশুমে নতুন ঘাসের জন্য ফি বছরের মতো এবারও বনের মধ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্ন ঘুরেছে মুখে মুখে।
বিষাক্ত ধোঁয়ার জন্য আবার অনেকের মনে হয়েছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে (Dumping ground) আগুন লেগেছে। বন, পুরনিগম কোনও তরফেই গত কয়েকদিনের রাতের ধোঁয়ার কারণ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি। ফলে রহস্যের মোড়কেই রয়েছে ধোঁয়া।
ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে দিনের ২৪ ঘণ্টাই আগুন জ্বলতে থাকে। কিন্তু সেই আগুন থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা কখনোই গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে না। ফলে শহরবাসীকে তেমন কোনও সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না। কিন্তু রবিবার রাতের ধোঁয়া এতটাই বিষাক্ত হয়ে উঠল যে, বাড়ির বাইরে থাকা মানুষজন চোখ খোলা রাখতে পারলেন না। অনেকের চোখ লাল হয়ে গিয়ে জল পড়তে থাকল। পাশাপাশি শ্বাসকষ্টও শুরু হয়ে যায় অনেকের। সবমিলিয়ে ধোঁয়া নিয়ে কৌতূহলের পাশাপাশি ক্ষোভ ছড়ায় সাধারণের মধ্যে।
শান্তিনগরের সুজিত বসাকের কথায়, ‘কয়েকদিন ধরেই রাত একটু বাড়লে ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে এলাকা। আজকের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। খোঁজ করেও জানতে পারলাম না আগুন কোথায় লেগেছে!’ চয়নপাড়ার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে প্রধাননগরের বাসিন্দা অলোক দাশগুপ্ত বলেন, ‘চশমা পরে থাকার পরেও চোখ জ্বালা করছিল। কষ্ট হচ্ছিল কথা বলতে। কোনওরকমে নিজেকে সামলে বাড়ির দিকে যাই।’
এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন অনেকেই। দক্ষিণ ভারতনগরের তমাল সূত্রধর বলেন, ‘প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। এটা খুব দুর্ভাগ্যের।’