প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: তিহার জেলে বন্দি গোরুপাচার কাণ্ডের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন মেয়ে সুকন্যা। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার অনুব্রতর সঙ্গে সুকন্যার প্রায় ২০ মিনিট একান্ত বার্তালাপ হয় তিহার জেলে। জানা গিয়েছে, অসুস্থ অনুব্রতকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন সুকন্যা। মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে আশ্বস্ত করেন অনুব্রত। বাবার আর কী কী শারীরিক সমস্যা হচ্ছে বারে বারে তা জানতে চান সুকন্যা। অনুব্রত ঠিকমতো ওষুধপত্র খাচ্ছেন কিনা, জেলের হাসপাতালে ঠিকমতো ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে কিনা, তাও জিজ্ঞাসা করেন সুকন্যা। অনুব্রত তাঁর মেয়েকে আশ্বস্ত করে জানান, তিনি মোটামুটি সুস্থই আছেন।
আগামী ২৩ মে অনুব্রত এবং তার তিনদিন পর অর্থাৎ ২৬ মে সুকন্যার জামিনের আবেদনের শুনানি রয়েছে রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে। সেই সমস্ত আইনি বিষয় নিয়েও উভয়ের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় বলে তাঁদের আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিন আইনজীবীদের বিভিন্ন বক্তব্য নিয়েও কথা হয় দুই পক্ষের। তবে এর মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল অনুব্রতর শারীরিক অবস্থা সম্বন্ধে সুকন্যার উদ্বেগ। এদিন তিনি বারে বারে বাবাকে চিন্তা করতে বারণ করেন। অতি দ্রুত যাতে অনুব্রতকে জেলের বাইরে কোনও বড় হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায়, তার উপরেও বার বার জোর দেন সুকন্যা।
অনুব্রত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাঁকে তিনবার এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জিবি পন্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দু’বার। তা সত্ত্বেও বাবার কী চিকিৎসা হচ্ছে? কী কী ওষুধ বাবাকে দেওয়া হচ্ছে? এই সব কিছু নিয়েই বারে বারে উদ্বিগ্ন হন সুকন্যা। অনুব্রতর কোনও ভুল চিকিৎসা হচ্ছে কিনা, সেই বিষয় নিয়েও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এর আগে রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে হাজিরার সময়ে হুইলচেয়ারে করে এসেছিলেন অনুব্রত। তিনি সুকন্যাকে জানান, হাঁটতে চলতে পারছেন না। যতদিন যাচ্ছে ততই তিনি দুর্বল হয়ে পড়ছেন। শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। বাড়ছে বুকে ব্যথাও। বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুকন্যা। বৈঠক শেষেও বাবাকে বেশ কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরেছিলেন তিনি। তখনও কাঁদতে দেখা যায় সুকন্যা এবং অনুব্রতকে।