পূর্ণেন্দু সরকার,জলপাইগুড়ি: অযোধ্যায় রাম মন্দির (Ayodhya Ram Mandir) উদ্বোধনের দিনই জলপাইগুড়ি শহরে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বামনপাড়া ৫ নম্বর গুমটি এলাকায় রামলালার ২২ ফুট উচ্চতার মূর্তিকে পুজো করা শুরু হয়। তিনদিন ধরে ওই পুজো চলে। পুজোপর্ব সাঙ্গ হওয়ার পর মণ্ডপ খোলা হলেও মূর্তিটি সেখানে একইভাবে রয়ে গিয়েছে। ফাটল ধরে সেটি নষ্ট হওয়া শুরু করেছে। তবে মূর্তিটিকে ওই জায়গা থেকে সরানোর কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। সামনে দিয়ে যাঁরা যাতায়াত করছেন তাঁরা মূর্তিটিকে প্রণাম করছেন। অনেকেই মূর্তিটির সঙ্গে সেলফিও (Selfie) তুলছেন। আর এ কারণেই এই মূর্তিটিকে কেন্দ্র করে রাজনীতির অভিযোগ জোরালো হওয়া শুরু করেছে।
লোকসভা ভোট (Lok Sabha Election) আসন্ন। ভোটে সুবিধা কুড়োতেই মূর্তিটিকে ইচ্ছে করে এখানে রেখে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জলপাইগুড়ি টাউন (Town) ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হিন্দুত্বের নামে আরএসএস ও বিজেপি যে রাজনৈতিক খেলা শুরু করেছে তা মানুষ মানতে চাইছে না। ধর্মকে নিয়ে প্রকাশ্যে এভাবে রাজনীতি করাটা কোনওমতেই উচিত নয়।’ শ্রী রামলালা প্রাণপ্রতিষ্ঠা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মানস মুস্তাফি অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘রামলালার মূর্তির নিরঞ্জন দেওয়া যায় না বা একে পোড়ানোও যায় না। গায়ে জল ঢেলে এই মূর্তি নষ্ট করে ফেলতে হবে। এ বিষয়ে দমকলকে (Fire Brigade) লিখিতভাবে জানানো হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’ জলপাইগুড়ি দমকলকেন্দ্রের অফিসার (Officer) আরএস পান্ডে বলেন, ‘আমাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বটে। কিন্তু জল দিয়ে মূর্তি গলানোর বিষয়ে আমরা নিজেরা কোনও উদ্যোগ নিতে পারি না। ওপর মহল থেকে নির্দেশ দিলে আলাদা বিষয়।’
এলাকায় মূর্তিটি ফেলে রাখার পর ইতিমধ্যে সেটি দর্শনীয় বস্তু হয়ে উঠেছে। আশপাশ থেকে তো বটেই, দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে গাড়ি নিয়ে এখানে ফাঁকা মাঠে ফেলে রাখা রামলালার মূর্তিটি দেখতে আসছেন। তবে এভাবে মূর্তিটিকে এখানে ফেলে রাখায় রমেশ আগরওয়ালের মতো অনেকে আপত্তিও জানিয়েছেন। পাল্লা দিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও সরব হয়েছেন। জলপাইগুড়ি টাউন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অম্লান মুন্সি বলেন, ‘আসলে মূর্তিটিকে এখানে এভাবে ফেলে রেখে ভোটের প্রচার করা হচ্ছে। একই সুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্যও সরব হয়েছেন। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি রাজনীতির অভিযোগ মানতে চাননি। আরএসএসের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক খগেন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ‘মূর্তি সরানো নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। কিন্তু কোনও রাজনীতি করা হয়নি। সমস্যা মেটাতে সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মূর্তিটির বিষয়ে দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাঁরা যা করার করবেন বলে জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান (Vice Chairman) সৈকত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।