মোথাবাড়ি: শীঘ্রই গঙ্গার মাঝে জেগে ওঠা একাধিক মৌজায় সীমানা নির্ধারণ ও সার্ভের কাজ শুরু হচ্ছে। প্রথমে কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের সমস্ত মৌজায় এই সার্ভে ও সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে জেলার বিভিন্ন ব্লকে এই কাজ শুরু হবে। এনিয়ে এদিন এক উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলাশাসক নিতিন সিংঘানিয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসডিও সদর পঙ্কজ তামাঙ, অতিরিক্ত জেলাশাসক মৃদুল হালদার, অতিরিক্ত জেলাশাসক(এলআর) সম্পা হাজরা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ ৫ টি ব্লকের বিডিও, গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি, ও জন আন্দোলন কমিটি ও ভুক্তভোগী গঙ্গার চরের একাধিক বাসিন্দা।
এই মুহূর্তে মালদা জেলায় গঙ্গার বুকে মোট ২৬টি চর জেগে রয়েছে। এই ২৬ টি চরের মধ্যে ছটি চড়ে প্রায় আড়াই লক্ষ বাঙালির বসবাস। এর মধ্যে কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের মোট ১২টি মৌজা রয়েছে। এ চরের বাসিন্দারা মূলত নেই রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে বেঁচে রয়েছেন। বাংলায় তাদের ঠাঁই না হলেও ঝাড়খণ্ড প্রশাসন তাদের ন্যূনতম কিছু পরিষেবা দিত। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিবেশী রাজ্যের সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, সেই রাজ্যের যে কোনও পরিষেবা পেতে হলে চরবাসীদের ১৯৩২ সালের সমস্ত নথিপত্র পেশ করতে হবে৷ এর ফলে চরবাসীরা আর সেরাজ্যের অধীনে থাকা স্কুলগুলিতেও ছেলেমেয়েদের ভর্তি করতে পারছেন না৷ এই পরিস্থিতিতে চরবাসীরা বাংলাভুক্তির দাবি তুলে গঙ্গা ভাঙ্গন নাগরিক অ্যাকশন প্রতিরোধ কমিটির নেতৃত্বে গঙ্গার চরে ১০১ জনের একটি কমিটি গড়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। জেলা শাসক গোটা বিষয়টিকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি চরের বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করার জন্য চিফ সেক্রেটারি কে জানান। চিফ সেক্রেটারি জেলাশাসককে নির্দেশ দিলে প্রশাসন এই কাজে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। সংগঠনের কর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, চরগুলিতে দু’লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করে৷ তাদের আমরা এ’রাজ্যের অধীনে আনতে চাই৷ জেলা শাসক নীতিন সিংঘানিয়া জানান, গঙ্গার চরে যতগুলি মৌজা পড়ছে তা চিহ্নিতকরণ করে নতুন করে চরগুলিতে সার্ভে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে খুব শীঘ্রই গঙ্গার চর পর্যবেক্ষণ করা হবে।