রায়গঞ্জঃ সঠিক সময়ে রক্ত না পাওয়ায় মৃত্যু হল নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধুর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বধূকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরেশ সারোগী মৃত বলে ঘোষণা করেন। মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই গৃহবধূর নাম তনুশ্রী বর্মন (১৮) বাড়ি কালিয়াগঞ্জ থানার ফতেপুর সংলগ্ন ভবানীপুর গ্রামে। ওই অন্তঃসত্ত্বা বধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়না তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জরুরী বিভাগের চিকিৎসক। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হবে কাল অর্থাৎ শনিবার।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ কালিয়াগঞ্জের বটতলা এলাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা বধূ। তাঁর শরীরে রক্তাল্পতার কারণে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। এদিনই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো দুপুর দুটো নাগাদ রক্ত নেওয়ার জন্য তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত না থাকায় মহিলার পরিবারকে একই গ্রুপের রক্তের ডোনার নিয়ে আসার কথা বলা হয়। অনেক খোঁজার পরেও রক্ত না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় মৃতার স্বামী সমীর বর্মনকে। যত সময় গড়িয়েছে ওই বধূর অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়েছে। এরপর কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে রেফার করে।
এদিনই সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে ওই অন্তঃসত্ত্বা বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ওই বধুর মৃত্যু সংবাদ পেয়েই কান্না ভেঙে পড়েন মৃতার মা করুণাময়ী রায়, ও শাশুড়ি অলোকা বর্মন। শাশুড়ি অলোকা বর্মন বলেন, “সঠিক সময়ে রক্ত পেলে আমার বৌমা বেঁচে যেত। এদিন প্রসূতিরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানোর পর রক্ত অল্পতার জন্য কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক ইউনিট ও পজেটিভ রক্ত নিয়ে আসতে বলে। সঠিক সময় রক্ত না পাওয়ায় আমার বৌমাকে হারাতে হল।”
মৃত গৃহবধূর স্বামী সমীর বর্মন বলেন, “রক্ত নিতে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু রক্ত সংকট থাকায় দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল ও পজেটিভ রক্তের ডোনার কে নিয়ে এসে রক্ত নিয়ে যেতে। কিন্তু ডোনার না থাকায় খালি হাতে ফিরতে হয় কালিয়াগঞ্জে। সঠিক সময়ে রক্ত পেলে আমার স্ত্রীকে হারাতে হত না।” রায়গঞ্জ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্তে পুলিশ। শনিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।