উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ অনুমোদন ছাড়াই চলছে সরকারি স্কুল। কলকাতা লাগোয়া বেহালায় এমনই অনুমোদনহীন স্কুলের হদিশ মিলেছে। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে স্কুলটি চলছে বলে সূত্রের খবর। শুক্রবার এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বিস্ময় প্রকাশ করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এই স্কুল থেকে পাশ করা ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশংকা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। প্রশ্ন তুললেন, জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাজ কি শুধু শিক্ষকদের বদলি তদারকি করা?
এই অনুমোদনহীন স্কুলটি বেহালার বিবেকানন্দ পল্লি কিশোর ভারতী উচ্চ বিদ্যালয়। ৩২ বছর ধরে কোনও সরকারি অনুমোদন ছাড়াই স্কুল চলছে। পেনশন সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে বিষয়টি সামনে আসে। জানা গিয়েছে, এই স্কুল থেকে ২০১৭ সালে অবসর নেন শিক্ষিকা ধারা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবসর নেওয়ার পর ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত তাঁর পেনশন চালু হয়নি। আদালতে শিক্ষিকার আইনজীবী জানান, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তাঁদের জানিয়েছে, ওই স্কুলের কোনও স্থায়ী অনুমোদন নেই। এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় ১৬০০০ টাকা বকেয়া থাকায় স্থায়ী অনুমোদন আটকে রয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরেই আঁতকে ওঠেন বিচারপতি বসু। ভর্ৎসনার মুখে পড়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। বিচারপতি বলেন, অনুমোদন ছাড়া ৩২ বছর ধরে একটা স্কুল চলছে? এই স্কুল থেকে পাশ করা হাজার হাজার ছাত্রর ভবিষ্যৎ তো অনিশ্চিত। তারা কোনও জায়গায় যদি পড়তে যায় আর সেই বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্কুলের অনুমোদন পরীক্ষা করে তাহলে তো তারা বিপদে পড়বে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক কী করছিলেন? তাঁর কাজ কি শুধু শিক্ষকদের বদলি তদারকি করা? এক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বসু।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী বলেন, ‘যে কোনও স্কুলকে প্রথমে অস্থায়ী অনুমোদন দেওয়া হয়। তার পর আবেদন করলে তারা স্থায়ী অনুমোদন পায়। এরকম বহু স্কুল আছে যারা স্থায়ী অনুমোদন চায়নি। তাই তারা অনুমোদন পায়নি’। একথা শুনে বিচারপতির প্রতিক্রিয়া, ‘এটা তো চিন্তার ব্যাপার’। বিচারপতি নির্দেশ দেন, স্কুলের অনুমোদনের জন্য কারও পেনশন আটকে থাকতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষিকার পেনশন চালু করতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ সেপ্টেম্বর।