পতিরামঃ শুধুমাত্র পুরুষ প্রার্থী হওয়ার কারণে বৈধ অ্যাডমিট কার্ড থাকা সত্ত্বেও এক চাকরিপ্রার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতেই দিল না পুলিশ। ফলে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেলেন এক যুবক। অবাক করা ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে।
রবিবার ছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের অধীনে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে প্রিলিমিনারি লিখিত পরীক্ষা ২০২২। এদিন এই কনস্টেবল পদে পরীক্ষা দিতে আসেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি থানার অধীন বটেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলিম। তাঁর সিট পড়েছিল পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলে। আব্দুল অ্যাডমিট কার্ড হাতে পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে তাকে বাধা দেয় কর্তব্যরত পুলিশ। পুলিশ জানায়, এই কেন্দ্রে শুধুমাত্র মেয়েরা পরীক্ষা দেবেন। কিন্তু অ্যাডমিট কার্ড বের করে এই পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম অন্যান্য সমস্ত তথ্য, দেখানো সত্ত্বেও তারা আব্দুল আলিমকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতেই দেয়নি বলে অভিযোগ। অতঃপর এই যুবক প্রায় দিশেহারা হয়ে কাঁদতে কাঁদতে পতিরাম থানায় ছুটে যান কিন্তু সেখানেও সমাধানসূত্র না পেয়ে আবার তিনি ফের আসেন পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে। আবারও তার বৈধ অ্যাডমিট কার্ড দেখিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের অনুরোধ জানান তাকে পরীক্ষা দিতে সুযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু এবারও পুলিশ তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি বৈধভাবে কনস্টেবল পদে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছি। আমাকে পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পুলিশের তরফে অ্যাডমিট কার্ড পাঠানো হয়েছে। তাহলে কেন আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না? এক্ষেত্রে আমার দোষ কোথায়? আমি তো কোন ভুল করিনি। তাহলে কেন আমাকে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হবে?’
তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, বেকারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। এমনিতেই চাকুরীর পরীক্ষা প্রায় উঠে গিয়েছে। এমএ পাস করে বেকার বসে আছি। এসএসসি ও বন্ধ। বহুদিন পর পুলিশের এই পরীক্ষার সুযোগ পেয়ে ভালো রকম প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম একটা ভালো পরীক্ষা দিতে পারব। কিন্তু পুরুষ প্রার্থী হওয়ার কারণে আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতেই দিল না। আমি এর তদন্ত চাই। এর ক্ষতিপূরণ চাই।
বিষয়টি নিয়ে পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ দীপা সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, স্কুলগেটে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকানোর দায়িত্ব পুলিশের। এক্ষেত্রে বিষয়টি পুরোপুরি তারাই দেখছেন। আমাদের কিছু করণীয় নেই। তবে যারা ভেতরে এসেছেন তাঁরা সকলেই পরীক্ষা দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে এই পরীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। এমন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।