উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ নিয়োগের দাবিতে এবার কলকাতার এম এলে হস্টেলের গেটের সামনে বিক্ষোভে শামিল হলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ হস্টেলের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শতাধিক চাকরিপ্রার্থী। কোনওভাবেই যাতে এমএলে হস্টেল থেকে বিধায়করা বের হতে না পারেন তারজন্য আটকে দেন হস্টেলের গেট। সকাল ১০টা থেকে আটকে পড়েন বিধায়করা। খবর পাওয়া মাত্রই লালবাজার থেকে ঘটনাস্থলে চলে আসে বিরাট পুলিশ বাহিনী। হস্টেলের গেটের সামনে থেকে চাকরিপ্রার্থীদের টেনে হিঁচড়ে চ্যাংদোলা করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ মণিপুর নিয়ে চিন্তিত সরকার, অথচ ৮৭১ দিন চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে গেলেও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের।
বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল কিড স্ট্রিটে বিধায়কদের হস্টেলের সামনে। এদিন নিয়োগের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীরা হস্টেলের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিধানসভায় যাওয়ার পথে আটকে পড়েন বিধায়করা। এদিন চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, ‘বিধানসভায় মণিপুর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়ে। অথচ যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে বিধানসভায় চুপ বিধায়করা। আজই বিধানসভায় নিয়োগের কথা তুলতে হবে’, এই দাবিতে এমএলে হস্টেলের গেটের সামনে বসে পড়েন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা। এর জেরে এমএলএ হস্টেলের গেট সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশ। তারা বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে সরতে না চাইলে তাঁদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজার থানায়।
এই ঘটনার সময়ই চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে গলা ফাটান বিজেপি বিধায়করাও। বিজেপির একাধিক বিধায়ককে হস্টেলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁরা রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। পুলিশ টেনে হিঁচড়ে বিক্ষোভকারীদের তুলতে থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, নীলাদ্রিশেখর দানা ও শিখা চট্টোপাধ্যায়। পুলিশের উদ্দেশে তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘টানা হেঁচড়া করবেন না। এদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। এরা আমাদের বাড়ির মেয়ে। এরা পশ্চিমবঙ্গের মেয়ে। অনুরোধ করে তুলুন। এদের দাবি মিটিয়ে তুলুন।’
বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বলেন, ‘এটা অপদার্থের সরকার। আমাদের এমএলএ হিসাবে লজ্জা। এটার জন্য আজ বিধানসভায় তুলকালাম হবে। বিজেপির বিধায়করা তো চাকরি বেচেননি। আমরা কেন অবরুদ্ধ হব? কেন আমাদের অবরুদ্ধে হতে হবে? এই সরকারকে জবাব দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। আমরা কী অপরাধ করেছি?’ শংকর ঘোষ বলেন, ‘আজকের ঘটনার জবাব চাইব বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। ঝড় তুলব’।
প্রসঙ্গত, ৮৭১ দিনে পড়েছে নবম থেকে দ্বাদশ ২০১৬-র এসএলেসটি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না। ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির নীচে। নিয়োগ নিয়ে বিধানসভায় বিধায়করা চুপ কেন, প্রশ্ন তুলে এদিন কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা।