রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সংহতি যাত্রা (Sanghati Rally) জমেও জমল না। সোমবার রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি তৃণমূল শিলিগুড়িতেও (Siliguri) সংহতি যাত্রা করেছে। তবে, এই র্যালিতে যতটা জমায়েত হওয়ার আশা ছিল, তৃণমূল শিলিগুড়িতে তা পূরণ করতে পারেনি। র্যালির শুরুতে কিছুটা জমায়েত থাকলেও র্যালির শেষ হওয়ার আগেই সেই ভিড় হালকা হয়ে গিয়েছে। দলীয় ঝান্ডা নিয়ে এই সংহতি যাত্রার আয়োজন নিয়ে দলের নেতা-নেত্রীদের অনেকেই এদিন প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এদিন শহরের বহু মানুষ রাস্তায় নামলেও কারও হাতেই বিজেপির ঝান্ডা ছিল না। সেই জায়গায় পালটা কর্মসূচিতে তৃণমূলেরও দলীয় ঝান্ডাকে সরিয়ে রেখেই সর্বধর্মের সমন্বয় দেখানো উচিত ছিল। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেছেন, ‘দলের নির্দেশেই এই মিছিল করা হয়েছে। আমরা মিছিলের শুরুতেই সর্বধর্মের বিশিষ্টজনদের রেখেছিলাম। মিছিলে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি।’
রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল থেকেই মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। হাতে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের ছবি দেওয়া ঝান্ডা, গেরুয়া গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, টুপি পরে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। তবে, কোথাও বিজেপির দলীয় ঝান্ডা নিয়ে কোনও নেতা-নেত্রী বা সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় দেখা যায়নি।
এরই মধ্যে তৃণমূল এদিন বিকেলে বাঘা যতীন পার্ক থেকে সংহতি যাত্রার আয়োজন করেছিল। দলের জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ কাছারি রোডের মায়ের ইচ্ছা কালীবাড়িতে পুজো দেন। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সংহতি যাত্রা শুরু হয়। র্যালির শুরুতেই খ্রিস্টান, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে রাখা হয়। পিছনে দলীয় ঝান্ডা এবং ব্যানার হাতে দলের নেতা-নেত্রীরা হাঁটেন। মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তীর মতো নেতারা র্যালিতে হাঁটেন।
র্যালিটি হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মিছিল থেকে মাইক বাজানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মিছিল হাসমি চকের ছোট মসজিদের সামনে দিয়ে ঘুরে হিলকার্ট রোড ধরে সেবক মোড়ের দিকে রওনা হওয়ার সময় উলটোদিকের লেনে রামভক্তদের অপর একটি মিছিল হাঁটছিল। সেই মিছিল থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়ায় সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে পুলিশি তৎপরতায় ঝামেলা হয়নি। মিছিল সেবক মোড় থেকে এগিয়ে পানিট্যাঙ্কি মোড় হয়ে কিরণচন্দ্র ভবনের সামনে শেষ হয়। তৃণমূল এই ভবনের উলটো দিকে সভা করে। সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা এই রাজ্যের সর্বধর্মের সহাবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখেন। গৌতম দেব ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ ভজন গেয়ে শোনান। পাশাপাশি, তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতাও আংশিক পাঠ করেন। জেলা সভানেত্রী পাপিয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বিজেপির মতো ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। ধর্মে ধর্মে বিভেদও সৃষ্টি করি না। এই রাজ্যে সর্বধর্মের সহাবস্থান আছে, আগামীতেও থাকবে।’