চাঁচলঃ নয় মাসের ফুটফুটে শিশুকন্যা। পরিবারের সকলের আদরের। দুইদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ওই আদরের কন্যা। তাই মা কোলের এই শিশুকে নিয়ে চাঁচল সদরে যান ডাক্তার দেখাতে। আর সেই ডাক্তার দেখাতে যাওয়াই যেন কাল হল। ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে অটো উল্টে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হল ৯ মাসের শিশুটির। মঙ্গলবার সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে খড়বা স্ট্যান্ডের কাছে আশাপুরগামী রাজ্য সড়কে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে, মৃত শিশুকন্যাটির নাম আনিসা পারভিন। বাড়ি খড়বা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিচলামারি এলাকায়। গত দুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ছোট্ট আনিসা। এদিন সকালে মা সাগরী খাতুন চাঁচলে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান আনিসাকে। ডাক্তার দেখিয়ে অটো করে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। খড়বা স্ট্যান্ডের কাছে আশাপুরগামী রাজ্য সড়কে সাইকেল আরোহী এক স্কুল পড়ুয়া হঠাৎই অটোর সামনে চলে আসে। সেই সাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় অটোটি। বেশ কয়েকজন যাত্রী জখম হন। নয় মাসের আনিসাও গুরুতরভাবে জখম হয়। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি শিশুটিকে উদ্ধার করে খড়বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে রেফার করা হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আনিসাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের চৌকাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। বারবার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন আনিসার মা। বাবা আতাউর রহমান ভিন রাজ্যে কাজ করেন। আনিসার মা সাগরী খাতুন বলেন, “মেয়েটার শরীর ভালো ছিল না। তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলাম। কীভাবে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছিনা।”
প্রত্যক্ষদর্শী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অটোর সামনে সাইকেল আরোহী চলে আসায় বিপত্তি ঘটে। খুব মর্মান্তিক ঘটনা। কিন্তু এই এলাকাগুলিতে ট্রাফিকের তেমন নজরদারি থাকে না। দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিকের নজরদারি অত্যন্ত প্রয়োজন।”
এদিকে দুর্ঘটনার ফলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। অটোটিকে আটক করে আনে চাঁচল থানার পুলিশ। চালক পলাতক রয়েছে। চালকের খোঁজে চলছে তল্লাশি। স্থানীয়দের অভিযোগ এই রাস্তায় মাঝেমাঝেই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় অন্তত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের মোতায়েন রাখা উচিত পুলিশের। স্থানীয় সাগর আলীর বক্তব্য, “এই রাস্তা হল ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক। কিন্তু ট্রাফিক ব্যবস্থা বলতে তো কিছুই নেই।”