মালদা ও ফরাক্কা: তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে, ‘গনি মিথ’ মালদা থেকে উধাও। গত বিধানসভা নির্বাচনে সুজাপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী রেকর্ড মার্জিনে আবদুল গনি জেতার পর সেই আওয়াজ আরও চড়েছে। ঠিক সেই সময় দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর গলায় কিন্তু অন্য সুর। গনি গড়ে পা রেখেই প্রবাদপ্রতিম নেতার স্মৃতিচারণ শোনা গেল তাঁর গলায়। গনি আমলের উন্নয়ন প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। বিজেপিকে বিঁধেছেন। লোকসভা নির্বাচনে এনআরসি এবং সিএএ ইস্যু নিয়েই যে তিনি নির্বাচনের লড়াইয়ে নামছেন, তা সাফ জানিয়েছেন শাহনওয়াজ আলি রায়হান।
গত কয়েকটি নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে ঘাসফুল শিবিরে হইচই দেখা গিয়েছিল। সেই ঝামেলা এড়াতে গত রবিবার ব্রিগেড থেকে দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ৪২টি আসনেই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। প্রার্থীদের পরিচিতি করান খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। উত্তর মালদা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আগে থেকে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শোনা গেলেও দক্ষিণ মালদা আসনের প্রার্থী যেন ‘আউট অফ সিলেবাস’।
মালদা জেলা একসময় ছিল গনির গড়। সময়ের স্রোতে সেই মিথ এখন ফিকে। তবে গত লোকসভা নির্বাচনেও দক্ষিণ মালদা কেন্দ্র নিজেদের দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। সেবার কংগ্রেস পেয়েছিল প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ভোট। তৃণমূল পায় কয়েক হাজার কম।
বুধবার সকালে মালদায় পা রাখেন রায়হান। তিনি বলেন, ‘দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রচার শুরু করব। এখন নির্বাচন ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছি। গৌড়বঙ্গের মাটি সম্প্রীতির মাটি। ছোট থেকে এখানে বড় হয়েছি। কখনও হিন্দু-মুসলিম ভাবিনি। বিজেপি এখন সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলতে শুরু করেছে। এটা আটকানোই আমার লক্ষ্য। আমি লন্ডনের মাটিতে এনআরসি-সিএএ’র বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছিলাম। তা ছিল বিজেপির বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে নয়। তাতেই ওরা আমাকে দেশদ্রোহীর তকমা দিয়েছে। তবে আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’ শাহনওয়াজ আরও বলেন, ‘গণি খান ছিলের মালদার রূপকার। কিন্তু তাঁর পরবর্তী সময়ে মালদা জেলার মানুষের প্রয়োজনের কথা সংসদে ওঠেনি। সাংসদরা দিল্লিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন, ঘুমিয়েছিলেন।’
এদিন সকালে সামশেরগঞ্জে কিছুক্ষণ ভোট প্রচার করেন রায়হান। তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। এখানেও তিনি বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। পরে তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্বের নামে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে যদি হয়রানির মুখে পড়তে হয় তবে আমরা তা রুখে দেব। গত লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে কংগ্রেস মাত্র আট হাজার ভোটে জিতেছিল। তারা এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রের সাতটিতে তারা জিততে পারেনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তাদের ভোট নিম্নমুখী। এসব পরিসংখ্যান বলছে, আমরা ভালো জায়গায় আছি।’