রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election 2024) সব বুথে ওয়েব কাস্টিং বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)। সেই হিসাবে প্রতিটি বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসালেই হবে না, পুরো ব্যবস্থাটা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে হবে। কিন্তু দার্জিলিং (Darjeeling) লোকসভা কেন্দ্রের এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে ইন্টারনেট তো দূর, মোবাইলে কথা বলাও দুষ্কর। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের অধিকাংশ পাহাড়ি এলাকাতেই মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। বিশেষ করে পি-২ বুথগুলিতে।
সেই বুথগুলিতে ওয়েব কাস্টিংয়ের (Webcasting in Election) ব্যবস্থা করাই চ্যালেঞ্জ জেলা নির্বাচন দপ্তরের কাছে। দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত নির্বাচন আধিকারিক তথা সদরের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা বলেছেন, ‘সব বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। যতটা সম্ভব ব্যবস্থা করা হবে।’ সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেদিন বিকেলে সব প্রার্থীকে নিয়ে দার্জিলিংয়ে বৈঠক ডেকেছেন নির্বাচন আধিকারিক।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে পাহাড়ের তিনটি এবং সমতলের চারটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। সমতলে সেভাবে সমস্যা না থাকলেও পাহাড়েই ইন্টারনেট সমস্যা মারাত্মক। শহরাঞ্চলেও ভালোভাবে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায় না। দার্জিলিং শহরেও বেশিরভাগ মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার ইন্টারনেট চালু অবস্থায় বাফারিং হয়। শহরের রেলস্টেশন হোক বা লেবং রোডের দিকে এগোলে মোবাইলে কথা পর্যন্ত বলা যায় না। পুলবাজার ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও একই সমস্যা। পি-২ বুথগুলিতে গাড়িতে করে যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় ভোটের দু’দিন আগে ভোটকর্মীরা রওনা দেন। এর মধ্যে দারাগাঁও জুনিয়ার হাইস্কুল, রাম্মাম ফরেস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়, সামানদেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ এলাকায় কোনও নেটওয়ার্কই নেই।
অন্যদিকে কালিম্পংয়ের তোদে, তাংতা, বিন্দু এলাকাও কার্যত ভারতীয় মোবাইল নেটওয়ার্কহীন। সেখানকার বহু মানুষ ভুটানের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। একই সমস্যা মিরিকেও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক বলেন, ‘পাহাড়ের ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভীষণ খারাপ। সমতলে ফোর-জি, ফাইভ-জি’র কথা হলেও পাহাড়ের শহরাঞ্চলে ইন্টারনেট টু-জি’র মতো কাজ করে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এই লোকসভা এলাকায় মোট ১৯৯৯টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ বুথে নেটওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে। সমীক্ষা করে দেখার পরে এর মধ্যে কয়েকটি বুথে বিকল্প ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করে ওয়েব কাস্টিং করা হবে। বাকি বুথগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে রেকর্ডিং করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এই সময়সীমার পরে প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রতীক বিলি করার পাশাপাশি বৈঠক করবেন দার্জিলিংয়ের রিটার্নিং অফিসার।