কিশনগঞ্জঃ স্ত্রীর সঙ্গে ভায়রা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের দৃশ্য দেখে ফেলাই কাল হল মুক-বধির স্বামীর। ধারাল অস্ত্রের সাহায্যে খুন হতে হল স্বামী মহম্মদ রশিদ আলমকে। শনিবার রাতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে কিশনগঞ্জের গন্ধর্বডাঙা থানা এলাকার তারাবাড়ি জরঝুললা গ্রামে। রবিবার সকালে রশিদের ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় এলাকারই এক নির্জন রাস্তায়। দেহ উদ্ধারের তিন ঘন্টার মধ্যেই খুনের ঘটনার কিনারা করে ফেলে পুলিশ। গ্রেপ্তার হয় মৃতের স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক সম্পর্কে জামাইবাবু মহম্মদ সাদ্দাম হুসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল মূক-বধির মহম্মদ রশিদ আলমের স্ত্রী আলেমা খাতুনের সঙ্গে সাদ্দাম হুসেনের। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রশিদের পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকতো। শনিবার রাতে মহম্মদ রশিদ বাড়ি ফিরে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পান স্ত্রী আলেমা ও ভায়রা সাদ্দাম হুসেনকে। বিষয়টি নিয়ে রশিদ প্রতিবাদ করতেই ধারাল অস্ত্র বের করে রশিদকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বলে অভিযোগ। এরপর গভীর রাতে ক্ষতবিক্ষত দেহটি এলাকারই এক নির্জন রাস্তায় দুজনে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। আর হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি এলাকারই এক ভুট্টার ক্ষেতে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা।
রবিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় রশিদের দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় গন্ধর্বডাঙা থানায়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে কিশনগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায় ময়না তদন্তের জন্য। এরপর ঘটনার তদন্তে রশিদের বাড়িতে গেলে তাঁর স্ত্রী ও ভায়রা সাদ্দামের পরকিয়ার বিষয়টি পড়শিদের কাছ থেকে জানতে পারে পুলিশ। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঘরে ঢুকলেই তারা ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ দেখতে পায়। এরপরই পুলিশ আটক করে রশিদের স্ত্রী আলেমাকে। আলেমার কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে সাদ্দামের নাম। দেহ উদ্ধারের তিন ঘন্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার হয় দুই মূল অভিযুক্ত। পুলিশের কাছে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভুট্টার ক্ষেত থেকে পুলিশ উদ্ধার করে হত্যায় ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্রটি। পুলিশের দাবি, ধৃত শ্যালিকা ও জামাইবাবু জেরায় জানিয়েছেন, তাদের প্রেমের পথের কাঁটা সরাতেই রশিদকে খুন করা হয়েছে। সোমবার ধৃতদের কিশনগঞ্জ আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গৌতম কুমার।