উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির প্রতি তীব্র ঘৃনায় তিলে তিলে গোটা পরিবারকেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলেন এক গৃহবধূ। মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলির ঘটনা। মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে মৃত্যু হয় ওই পরিবারের ৫ জনের। নেপথ্যে রয়েছে পরিকল্পিত বিষক্রিয়া। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে্ এসেছে খাবারের মাধ্যমে থ্যালিয়াম বিষ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে পরিকল্পনা মাফিক সকলকে খুন করা হয়েছে। আর থ্যালিয়াম সাধারণত গন্ধ-স্বাদ ও বর্ণহীন হওয়ায় যেকোনও খাবারের সঙ্গে সহজেই মিশে যায়। ফলে না বুঝেই বিষাক্ত খাবার খেয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গেছেন অভিযুক্ত মহিলার স্বামী,শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দুই ননদ।
জানা গিয়েছে, নিজের শ্বশুরবাড়ির প্রতি নানা কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন সংঘমিত্রা। শ্বশুরবাড়ির অমতেই তিনি বিয়ে করেন। সম্প্রতি তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। এরপর শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে শ্বশুরবাড়ির সকলকে বিষপ্রয়োগে খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। নিজে বিজ্ঞানী হওয়ায় থ্যালিয়াম বিষ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন সংঘমিত্রা। আর এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন ওই পরিবারেরই আরেক সদস্য রোজা রামটেক। তিনিও সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে রুষ্ট ছিলেন। দুজনে মিলেই এই পরিকল্পনা করেন।
আর্সেনিক বিষ খাবারে মেশানোয় প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন সংঘমিত্রার শ্বশুর শংকর কুম্ভারে ও তাঁর স্ত্রী বিজয়া। চিকিৎসা করানো হলেও তাঁদের মৃত্যু হয়। শোকের আবহেই এরপর অসুস্থ হন তাঁদের দুই মেয়ে কোমল, আনন্দা ও ছেলে রোশন। পরপর তাঁদেরও মৃত্যু হয়। তদন্তে নেমে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারছিল না পুলিশ। দফায় দফায় মেডিকেল টিম পাঠানো হয় ওই পরিবারে। পরে দেখা যায় যারা মৃত তাদের প্রত্যেকের একই রকম উপসর্গ ছিল। পেশিতে অদ্ভুত অনুভূতি, পিঠে ব্যাথা, মাথা ব্যথা, ঠোট কালো ও জিভ ভারী হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ রয়েছে সকলের। এরপরই আর্সেনিক বিষক্রিয়ার সন্দেহ হতেই পুলিশি জেরা শুরু হয়। জানা যায়, ওই পরিবারের দুই সদস্য খাবারে অল্প অল্প করে আর্সেনিক মিশিয়ে খাওয়াচ্ছিল পরিবারের সদস্যদের। এর জেরেই বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয় পরিবারের ৫ জনের। এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত দুই মহিলাকেই গ্রেপ্তার করেছে।