শামুকতলা: ‘প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে। আমদের বিয়ে মা-বাবা মেনে নেন নি। এক সুন্দর জীবন আমাদের হবে সেই স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হল না। স্বামী বিয়ের পর থেকেই ভিনরাজ্যে থাকছেন। গত একবছর ধরে তিনি বাড়িতে আসেন না।‘ এমনভাবেই প্রবল মানসিক কষ্টের কথা সুইসাইড নোটে লিখে নিজের সাত বছরের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন গৃহবধূ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ার জেলার ভাটিবাড়ি বাজার এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম সীমা সাহা(২৮) ও শিশুকন্যার নাম মৌপ্রিয়া সাহা(৭)। স্বামী দীপঙ্কর সাহা হরিয়ানায় প্লাইউড ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন।
সোমবার রাতে শাশুড়ি সহ তিনজন একসঙ্গে রাতের খাওয়ার পর আলাদা ঘরে ঘুমাতে যান সীমা এবং তাঁর মেয়ে। মঙ্গলবার সকালে সীমার শাশুড়ি রেবা সাহা ঘুম থেকে উঠে বারবার ডাকাডাকি করলেও সীমার সাড়া পাচ্ছিলেন না। এরপর জানালার ফাঁক দিয়ে বৌমার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়েই আশপাশের লোকজনদের খবর দেন। খবর পেয়ে শামুকতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
মৃতার স্বামী দীপঙ্কর বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে আর্থিক সমস্যা চলছে। ৭০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিতে যাওয়ার সময় সেই টাকা খোয়া যায়। তাই ঠিকমত টাকা পাঠাতে পারছিলাম না।‘
শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায় জানান, মৃত মহিলা সুইসাইড নোটে তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। তবে তাঁর দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না সেটা তিনি সেই সুইসাইড নোটে লিখেছেন। প্রবল আর্থিক অনটন এবং মানসিক অশান্তিতেই ওই মহিলা আত্মহত্যা করেছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে বলা সম্ভব হবে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।