সোনাপুর: পরকীয়ায় অভিযুক্ত মহিলাকে সন্তান সহ বাপের বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন ভাই। ঘটনার প্রেক্ষিতে অরুণাচল প্রদেশে কর্মরত ওই মহিলার স্বামীও গ্রামে ফিরে এসেছেন। তিনিও গ্রামের উত্তেজক পরিস্থিতিতে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসতে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। স্বামীর অবর্তমানে গৃহবধূর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে গাছে বেঁধে মারধর ও গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানোর মতো কাজ গ্রামবাসীরা আদৌ করতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শনিবার আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। ওই বধূ স্বামীর অবর্তমানে কোচবিহারের এক তরুণের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িেয় যায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি গ্রামবাসীরা হাতেনাতে ধরে তাদের শাস্তিও দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে। তবে লিখিত অভিযোগ না মেলায় তাকে ছেড়ে দেয়। এদিন ওই গ্রামে গিয়ে জানা গিয়েছে, রবিবার ওই তরুণীর ভাই দুই বাচ্চা সমেত তাকে বাড়ি নিয়ে যায়।
গ্রামের একাংশের দাবি, তরুণীকে গ্রামে ফেরানোর আগে তাকে বাপের বাড়িতেই ভবিষ্যতে যাতে এমন ভুল আর না করে তা নিশ্চিত করার আশ্বাস চাওয়া হয়। সোমবার ওই তরুণীর স্বামী গ্রামে ফিরতেই তাঁকে ঘিরে এমনই দাবি জানান গ্রামবাসীরা। তিনি অরুণাচল প্রদেশে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। এদিন সকালেই তিনি ফিরে এলেও নিজের বাড়িতে না গিয়ে পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। এদিন তিনি বলেন, ‘শনিবার ঘুম থেকে উঠে ফোন পাই। সেখানে সবকিছু জানানো হয়। এসব শুনে কীভাবে ফিরলাম নিজেই জানি না। স্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়নি। ও শ্বশুরবাড়িতে আছে।’ উনি আরও জানান, স্ত্রীকে কোথায় রাখবেন সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তাঁর সংযোজন, ‘গ্রামের মানুষ যেভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন তাতে কয়েকদিন আর ওকে বাড়িতে আনব না ভাবছি।’
গ্রামে যে গাছে তাদের বেঁধে রাখা হয়েছিল এদিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ওই সুপারি গাছে তখনও বাঁধার কাপড়টি ঝুলছে। পাশে পড়ে আছে দুটি জুতোর মালা ও ওই তরুণের কাটা চুল। সেখানে দাঁড়িয়ে গ্রামের এক মহিলা জানান, কোনও মহিলা এমন সম্পর্কে জড়ালে গ্রামে তার খারাপ প্রভাব পড়ে। আর এক বয়স্ক বাসিন্দা জানান, ওই তরুণী একেবারে যাতে গ্রামে না ফেরে সেটা কেউ চায় না। তবে সে যে ভুল করেছে সেটা উপলব্ধি করলেই ওকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে। এদিন ওই তরুণীর ভাই জানান, দিদিকে যেভাবে মারধর ও নিগ্রহ করা হয়েছে তা নিয়ে আইনি পথে যাওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। দিদি মানসিকভাবে আহত হয়েছে।