শিলিগুড়ি: রোজা ভেঙে নকশালবাড়ি থেকে শিলিগুড়ি এসে এক অপরিচিত মহিলাকে রক্ত দিলেন মহম্মদ জাকির হুসেন। মহিলার নাম লক্ষ্মী বিশ্বাস। তিনি শিলিগুড়ি মহকুমার বাতাসি বড় কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। গত ১২ মার্চ লক্ষ্মী খড়িবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে শুক্রবার তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দরকার হয় রক্তের। সেই রক্ত দিতেই রবিবার নকশালবাড়ি থেকে শিলিগুড়ি আসেন জাকির।
এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দেন জাকির। সেখানে জাকিরের সঙ্গে লক্ষ্মীর ছেলে পঙ্কজ বিশ্বাসকেও দেখা যায়। সেখানে জাকিরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যার রক্ত লাগবে সে কে হন? তাঁর উত্তর, ‘সহনাগরিক। এখনও দেখিনি তাঁকে। সকালে এক পরিচিতর থেকে বিষয়টা জানতে পারি। এখানে এসে লক্ষ্মীর ছেলের সঙ্গে আলাপ হল।’
বছরখানেক আগে লক্ষ্মী লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পঙ্কজ বলেন, ‘অপারেশনের পর সাতটি দামি ইনজেকশন প্রয়োজন ছিল। যার একেকটির দাম প্রায় সাত হাজার টাকা করে। দুটি ইনজেকশন দেওয়ার পর আর্থিক কারণে আর দিতে পারিনি। তাই মাঝেমধ্যেই মাকে রক্ত দিতে হয়। এবারে ডাক্তার তিন ইউনিট রক্ত লাগবে বলেছিলেন। দুই ইউনিটের পর আর জোগাড় হয়নি।’ এদিন সকালেই স্থানীয় একজনের মাধ্যমে বিষয়টি জাকিরের কানে আসে। সেইমতো দ্রুত রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। রওনা হন শিলিগুড়ির উদ্দেশে। জাকির বলেন, ‘ছাত্রজীবনে দু’বার কলেজ ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলাম। সেই সময় থেকেই মানুষের জন্য কাজ করতে শিখি। এই নিয়ে ২৬ বার রক্ত দেওয়া হল।’
জাকির বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। এর সঙ্গে এলাকায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও তৈরি করেছেন তিনি। বর্তমানে রয়েছেন সেই সংগঠনের সম্পাদক পদে।