উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রামনবমী উপলক্ষ্যে অযোধ্যার রামমন্দিরে (Ayodhya Ram Mandir) উপচে পড়ল ভক্তদের ভিড়। সূর্য যখন মধ্যগগনে, ঠিক সেই মুহূর্তে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে এক মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা করছিলেন পুরোহিত-সহ মন্দির কর্তৃপক্ষের অন্য সদস্যরা। দুপুর ১২টা নাগাদ কয়েক মিনিটের জন্য সরাসরি নীল রঙের সূর্যরশ্মি এসে পড়ল ‘রামলালা’র কপালে। রামবিগ্রহের ‘সূর্যতিলকের’ (suryatilak) অনন্য মুহূর্তের সাক্ষী থাকল সারা দেশ।
বুধবার রামনবমী উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করেছে অযোধ্যা রামমন্দির কর্তৃপক্ষ। ‘সূর্যতিলকের’ ব্যবস্থাও সেই জন্যই। কয়েক জন ভারতীয় বিজ্ঞানী মিলে এমন এক যন্ত্র তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে সূর্যরশ্মি সরাসরি এসে পড়ে রামবিগ্রহের কপালে। ৫.৮ সেন্টিমিটার আলোকরশ্মি বিগ্রহের কপালে বিচ্ছুরিত হওয়ার ঘটনাকেই ‘সূর্যতিলক’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে পুরো বিষয়টি সম্ভব হয়েছে। এক শীর্ষ স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের দশ বিজ্ঞানী রামমন্দিরে থেকে এই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। আয়না এবং লেন্স ব্যবহার করে সেই যন্ত্র মন্দিরের মাথায় এমনভাবে বসানো হয়েছে যাতে সূর্যের আলো একাধিক আয়নায় বিচ্ছুরিত হতে হতে তা সরাসরি রামলালার বিগ্রহের কপালে এসে পড়ে।
রুরকির ‘সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিবিআরআই)’-এর বিজ্ঞানী তথা ডিরেক্টর প্রদীপকুমার রামচারলা ‘সূর্যতিলক’-এর নেপথ্যে থাকা বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করেছেন। রামচারলার কথায়, ‘‘অপ্টো-মেকানিক্যাল সিস্টেমে চারটি আয়না এবং চারটি লেন্স থাকে। ‘টিল্ট মেকানিজম’ ব্যবহার করে ওই আয়না এবং লেন্সগুলি পাইপের ভিতরে লাগানো হয়। পাইপটি মন্দিরের ছাদ অবধি লম্বা। সূর্য ওই পাইপের মাথায় আসতেই সূর্যরশ্মি পাইপের ভিতরে থাকা আয়না এবং লেন্সে বিচ্ছুরিত হতে হতে তা গর্ভগৃহে প্রবেশ করে। পাইপের সব থেকে শেষ লেন্স এবং আয়না এমনভাবে বসানো হয়েছে যাতে সূর্যরশ্মি গর্ভগৃহে প্রবেশ করে একটি ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে রামলালার কপালে এসে পড়ে।‘
তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতি বছরই রামনবমীর দিন সূর্যতিলকের ব্যবস্থা থাকবে। সূর্যরশ্মি যাতে সরাসরি ‘রামলালা’র কপালে এসে না লাগে, তার জন্যই ওই ফিল্টার লাগানো হয়েছে। যে লেন্স এবং আয়না ওই যন্ত্রের মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উন্নত মানের। পাইপ-সহ যন্ত্রের অন্যান্য অংশ তৈরি হয়েছে পিতল দিয়ে।