নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা যেমন তলানিতে। তেমনি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার অবস্থা আরও ভয়ংকর। একটিমাত্র বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের উপর নির্ভরশীল মাদারিহাটের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ।
মঙ্গলবার রাতে হল্লাপাড়া বারহালিতে হাটফেরত গাড়ি উলটে তিনজনের মৃত্যু হয়। আটজন জখম হন। দুর্ঘটনার পর জখমদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে আনার জন্য প্রয়োজন ছিল বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্সের। কিন্তু মাদারিহাট থানার বড় অ্যাম্বুল্যান্সটি গ্যারাজ থেকে বের করতে গিয়ে চালক দেখেন একদিকে ব্রেক কাজ করছে না। অ্যাক্সিলারেটারও কাজ করছে না। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চালক দেখেন ধেড়েইঁদুর সব তার কেটে দিয়েছে। এরপর হাসিমারা ও বীরপাড়া থেকে অ্যাম্বুল্যান্স এনে জখমদের মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতালে আনা হয়। ততক্ষণে অবশ্য দুজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে রেজ্জাক আলিকে একটি প্রাইভেট গাড়িতে নিতে বাধ্য হন তাঁর পরিজনেরা। বীরপাড়া নেওয়ার পথে রাঙ্গালিবাজনার কাছেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের শ্বশুর মহম্মদ নাসিমুদ্দিনের অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স না থাকার জন্য মাদারিহাট থেকে বীরপাড়া নিয়ে যেতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।
মাদারিহাট থানার ওসি মিংমা শেরপা বলেন, ‘থানার অ্যাম্বুল্যান্সটি দু’দিন আগেও ভালো ছিল। কিন্তু ইঁদুর অ্যাম্বুল্যান্সের তার কেটে দিয়েছে। এর আগেও এই কাণ্ড করেছে ইঁদুর।’
মাদারিহাট–বীরপাড়া ব্লকের সবক’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এমপিল্যাডের টাকায় অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স দুই বছর আগে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি চালানোর জন্য চালকদের বেতন, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ এবং তেলের খরচ দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে কিছুই বরাদ্দ করা হয় না বলে অভিযোগ। যে কারণে ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। আর মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের অ্যাম্বুল্যান্সটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর থানায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাদারিহাট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবজ্যোতি চক্রবর্তীর কথায়, ‘অ্যাম্বুল্যান্স না থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
মাদারিহাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রশিদুল আলম বলেন, ‘চালক নিয়োগ, তাঁদের বেতন সহ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বহন করার জন্য সরকারি কোনও নির্দেশ নেই।’