বালুরঘাট: এ যেন মুদিখানা। রাত ৮টা বাজলেই বন্ধ করে দেওয়া হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) একমাত্র মহিলা থানা ও সাইবার ক্রাইম থানার দরজা। থানার দরজায় তালা দিয়ে চাবি নিয়ে বাড়ি চলে যান ওসি, আইসিরা। ভূ-ভারতে এমন কাণ্ড আর কোথাও হয় কি না জানা নেই।
সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বালুরঘাটে (Balurghat) এই দুই থানার দরজা খোলা থাকলেও, তারপর থেকে পরিষেবা বন্ধ। থানা, হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানগুলির পরিষেবা ২৪ ঘণ্টা দেওয়ার কথা থাকলেও, বালুরঘাটের এই দুই থানার অফিসারদের এমন কাণ্ডে হতবাক জেলাবাসী।
নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা বিশেষভাবে সমাধানের জন্য জেলায় জেলায় পৃথকভাবে মহিলা থানা গড়ে তোলা হয়েছে। অভিযোগ, সারা জেলার জন্য ওই একটি মাত্র মহিলা থানায় কার্যত ভারী মামলা রুজুই হয় না। তার বদলে জেনারেল থানাগুলিতেই মামলার সংখ্যা বাড়ছে। যদিও এক জেলা পুলিশকর্তার মতে, ওই দুই থানাতেই যেহেতু পরিকাঠামো কম ও চাপ কম থাকে, তাই ওই থানাগুলি রাতে একটা সময়ের পর বন্ধ রাখা হয়। ওই সময় এমারজেন্সি কিছু হলে, ওসি, আইসিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা বা জেনারেল থানার দ্বারস্থ হতে পারেন মানুষ।
বালুরঘাট শহরের নাট্যমন্দির সংলগ্ন এলাকার একটি ভবনের তিনতলায় সামনাসামনি দুটি ঘরে এই দুটি থানা রয়েছে। দুটি থানাতেই ইনস্পেক্টর, এসআই, এএসআই পদাধিকারীরা কর্মরত রয়েছেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই দুই থানাতে অভিযোগ জানাতে আসার কথা মানুষের। কিন্তু রাত আটটা বেজে গেলে দুই থানাই বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। মহিলা থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে ফিরে আসা এক গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘আমার বিবাহিত মেয়ের একটা সমস্যা নিয়ে আমি কয়েকদিন আগে বালুরঘাট মহিলা থানায় যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে তালা বন্ধ দেখি। শেষ পর্যন্ত বালুরঘাট থানায় যাই। সেখানেই আমাকে পরের দিন মামলা করতে আসতে বলা হয়।’ সাইবার ক্রাইমের শিকার হওয়া এক অভিযুক্তের দাবি, ‘রাতে সোশ্যাল মিডিয়ার (Social media) মাধ্যমে আমি প্রতারিত হই। তড়িঘড়ি রাতেই সাইবার ক্রাইম থানায় গিয়ে দেখি সেখানে তালা ঝুলছে। পরদিন ওই থানায় ফের যেতে হয়েছে। প্রতারকদের পাল্লায় পড়ে সারা রাত টেনশনে ঘুমাতে পারিনি।’
কিন্তু কেন, এই প্রশ্নের জবাবে জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তলের সাফ জবাব, ‘এই নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অর্ডার নেই। তবে এমারজেন্সি হলে ওসি, আইসিদের নম্বর দেওয়া আছে। মানুষ যোগাযোগ করতে পারবে।’