অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার ব্লাড ব্যাংকগুলোয় শুরু হয়েছে রক্ত সংকট (Blood Shortage)। জেলার তিনটি ব্লাড ব্যাংকের (Blood Bank) পুঁজি প্রায় প্রতিদিনই শূন্য হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমনই যে আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে অস্থি বিভাগের অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন যে, যেসব অপারেশন কয়েকদিন পড়ে করলেও সমস্যা হবে না, সেগুলিই পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁরা মেনে নিয়েছেন যে পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। কয়েকদিনের রক্ত মজুত করা তো দূরের কথা, প্রতিদিন যেটুকু রক্ত প্রয়োজন সেটুকুই কোনওরকমে জোগাড় হচ্ছে। কাের্ডর পরিবর্তে ডোনার দিয়ে রক্ত দেওয়া হচ্ছে।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ পরিতোষ মণ্ডল বলেন, ‘শুধু সরকারি হাসপাতালই নয়, বেসরকারি হাসপাতালে যে অস্থি বিশেষজ্ঞরা অস্ত্রোপচার করেন, তাঁদের কাছেও আবেদন করা হয়েছে যে রক্তের এই সংকটে কয়েকদিন কিছু অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দিতে।’ প্রায় ১০ দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলছে জেলায়।
সুপার জানালেন, রক্ত সংকটের মধ্যেও অন্য বিভাগের রোগীদের অপারেশন করা হচ্ছে। কেবল অস্থি বিভাগের ক্ষেত্রে কিছু অপারেশন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে রোগীর সমস্যা যেন না হয়, সেটাও দেখা হচ্ছে। জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, লোকসভা ভোট গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এইভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে অস্থি বিভাগকে।
জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে প্রতিদিন ৩০-৩৫ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। ভোট ঘোষণার আগে প্রতিদিন এর থেকে বেশি পরিমাণ রক্ত মজুত থাকত। তবে, গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে একদিনের প্রয়োজনীয় রক্তও মজুত থাকছে না। এই যেমন সোমবার দুপুর পর্যন্ত জেলা হাসপাতালে মাত্র ১৭ ইউনিট রক্ত মজুত ছিল। এরমধ্যে ‘এ’ পজেটিভ ও ‘বি’ পজেটিভ রক্ত ছিল চার ইউনিট করে। ‘ও’ পজেটিভ পাঁচ ইউনিট, ‘এবি’ পজেটিভ তিন ইউনিট এবং ‘এবি’ নেগেটিভ রক্ত ছিল এক ইউনিট।
এদিন সমস্যার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি জেলা হাসপাতালে সাংবাদিক সম্মেলন করে সবাইকে রক্তদান করতে আবেদন জানান হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুমন কাঞ্জিলাল। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে যদি রক্তদান করে ব্লাড ব্যাংকে রক্ত না মজুত করা যায় তবে আগামীতে সমস্যা হতে পারে। যেহেতু দেশের সব থেকে বড় নির্বাচন হচ্ছে সেজন্যই যে কোনও বিপদ হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে রক্তের প্রয়োজন হতেই পারে।’ সুমন বিভিন্ন সংগঠনের কাছেও রক্তদান করার জন্য আহ্বান জানান। প্রয়োজন পড়লে হাসপাতালেই রক্তদান শিবিরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।