জলপাইগুড়ি: লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলায় রাবার চাষে উৎসাহ দিতে কাজ শুরু করল কেন্দ্রীয় রাবার বোর্ড। বুধবার নাগরাকাটার রাবার গবেষণাকেন্দ্রে রাবার চাষি ও ৩৫টি বড় চা বাগানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সাওয়ার ধানানিয়া। বৃহস্পতিবার তিনি জলপাইগুড়ি শহরে রাজ্যের একমাত্র এক্সটেনশন অফিসেও বৈঠক করেন। চেয়ারম্যান জানান, চলতি অর্থবছরে তঁারা উত্তরবঙ্গে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে নতুন করে রাবার চাষ শুরু করবেন। সরকারি ভরতুকি দেওয়া ছাড়াও বিনামূল্যে রাবার গাছের চারা বিলি করবে রাবার বোর্ড। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বিষয়টির মধ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বেশ কয়েক দশক ধরে নাগরাকাটায় রাবারের গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে। অথচ এত বছরেও রাবার চাষের প্রসার ঘটাতে কেন্দ্র কিছুই করেনি। ভোটের মুখে সরকারি ভরতুকি ও বিনামূল্যে চারা বিতরণ করে বিজেপি সরকার চাষিদের প্রভাবিত করতে চাইছে।’ তবে কেন্দ্রের সহকারী ভারতী প্রকল্পের জেলার সাধারণ সম্পাদক নিতাইপদ দত্তের সাফ বক্তব্য, ‘রাবার চাষে রাজনীতির বিষয় নেই। চাষিরা যাতে লাভবান হন সেই উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।’
একথা ঠিক নাগরাকাটায় ৪০ হেক্টর জমিতে গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্র থাকলেও উত্তরবঙ্গে রাবার চাষের প্রসারে উদ্যোগ সেই অর্থে কিছুই ছিল না। সাওয়ার বলেন, ‘কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর ২০১৯ সালে দেশে যেখানে রাবার চাষে ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এবার তা প্রায় দ্বিগুণ ৩৪০ কোটি করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ প্রকল্পে ২৩ শতাংশ বাজেট বাড়ানো হয়েছে। চাষিরা ফাঁকা জমিতে ও চা বাগানে রাবার চাষ করার জন্য ৪০ হাজার টাকা ভরতুকি এককালীন পাবেন। সেইসঙ্গে বিনামূল্যে রবার চারা পাবেন। বোর্ডের অনলাইন পোর্টালে ক্রেতা ও বিক্রেতা আছে। সেখান থেকেই উৎপাদিত রাবার বিক্রি করা যাবে। আমরা ২০২৪-’২৫ ও ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে উত্তরবঙ্গে মোট ১০ হাজার হেক্টর জমিয়ে রাবার চাষ শুরু করে দেব।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘রাবার চাষের জন্য আমরা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও শিল্প-বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। উত্তরবঙ্গের জেলা শাসকদের সঙ্গেও ধাপে ধাপে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি৷’
জলপাইগুড়ির এক্সটেনশন অফিসে বিশেষজ্ঞ উন্নয়ন আধিকারিক হিসেবে গোপীরঞ্জন দাস গোস্বামীকে নিযুক্ত করা হয়েছে। কীভাবে অফিস সাজানো হয়েছে এদিন তা দেখতে আসেন চেয়ারম্যান। গোপীরঞ্জন জানান, ইন্ডিয়ান নেচার লাভার অ্যাসিস্ট্যান্স ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট থেকে উত্তরবঙ্গ সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে রবার চাষে নিঃশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ড। রাজ্য ও কেন্দ্রের একাধিক কৃষক প্রকল্পের সুবিধাগুলিকে সমন্বয় করে রাবার চাষে চাষিরা যাতে আর্থিক সুবিধা পান সেই বার্তা নিয়েই বোর্ড এগিয়ে চলেছে। কেন্দ্রের ‘সক্ষম’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তনয় দাস সহ আরও কয়েকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে রাবার চাষে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।