দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। তাই সমাবর্তন বৈধ নয়। এই কারণ দেখিয়ে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়কে (Cooch Behar Panchanan Barma University) সমাবর্তনের (convocation) অনুমতি দিল না রাজ্য সরকার। একথা জানিয়ে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে সম্প্রতি চিঠি পাঠায় উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
নির্বাচনের আচরণবিধির কথাও সেই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। চিঠি হাতে পেয়েই সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ আবদুল কাদের সাফেলি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের নিয়ে একটি আলোচনায় বসেন।
পরবর্তীতে রেজিস্ট্রারের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক এবং সমস্ত বিভাগের প্রধান ও কোঅর্ডিনেটরদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জানতে চাওয়া হলে উনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উচ্চশিক্ষা দপ্তর চিঠিতে বলা রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৩০ তারিখ সমাবর্তন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে স্থায়ী উপাচার্য নেই। এই ধরনের পরিস্থিতিতে সমাবর্তন হলে তা বিধি লঙ্ঘন হবে।
রাজ্য সরকারের তরফে এ ধরনের কোনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এছাড়াও লোকসভা নির্বাচনের জন্য আচরণবিধিও কার্যকর থাকায় সমাবর্তন বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্ট এবং এগজিকিউটিভ কাউন্সিল নেই, সেখানে কীভাবে সমাবর্তন সম্ভব?
বিষয়টি নিয়ে ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি ডঃ পিয়াল বসু রায় বলেন, ‘সমাবর্তন মানে কোর্ট মিটিং। কোর্ট যদি না থাকে, মিটিং কী করে হবে? পরে যদি ডিগ্রি নিয়ে চ্যালেঞ্জ হয়, তার দায়িত্ব কে নেবে?’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক এবং বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে সমাবর্তন নিয়ে জরুরি আলোচনায় বসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ডঃ নিখিলচন্দ্র রায়।
সূত্রে খবর, সেই আলোচনায় আগামী ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বার্ষিক সমাবর্তনের বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই বৈঠকের কিছুদিন আগেই সমাবর্তন পরিচালনার জন্য কয়েকটি কমিটিও তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের দপ্তর থেকে রাজ্যপালের সম্মতিপত্রও এসে পৌঁছেছে বলে সূত্র মারফত খবর।
তবে সম্প্রতি উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে চিঠি আসায় আদৌ সমাবর্তন সম্ভব কি না সেই প্রশ্নই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে জেলাজুড়ে।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ডঃ অমল হোড়ের বক্তব্য, ‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী-ই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে।’
যদিও বিষয়টি নিয়ে নিখিলচন্দ্র রায়েকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না তোলায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।