হ্যামিল্টনগঞ্জ: ডিজিটাল যুগ যে ভারতে শুরু হয়ে গিয়েছে সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয়, রাজ্য সরকারের তরফে নানা সময়ে প্রচার করা হয়। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগেও কোনও কোনও গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছায়নি সে খবর রাখার দায়িত্ব কার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে উত্তর অজানাই। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের প্রত্যন্ত বক্সা পাহাড়ের গ্রাম পানবাড়ি বস্তি। প্রায় ৩৫টি পরিবার এখানে বসবাস করে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ ডুকপা জনগোষ্ঠীর মানুষ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আড়াই হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা ওই গ্রামের মানুষদের এখনও কেরোসিনের আলো বা মোমবাতির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সেই বাতিও জ্বলে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছর আগে তাঁরা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দপ্তরে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন জানানোর পাশাপাশি কোটেশনের টাকাও জমা করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গ্রামের আশপাশে একটি খুঁটিও পোঁতা হয়নি। বৃহস্পতিবার ওই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ হ্যামিল্টনগঞ্জের বাসিন্দা তথা আইনজীবী দেবাংশু ঘোষের সঙ্গে গ্রামে কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ মিলবে তা নিয়ে পরামর্শ করেন। দেবাংশু ঘোষ বলেন, ‘এই যুগেও সাধারণ মানুষ অন্ধকারে থাকছেন ভাবাই যায় না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা।’
পানবাড়ি বস্তির বাসিন্দা লাবদোজি ডুকপা বলেন, ‘রাত হলেই গোটা গ্রাম অন্ধকারে ডুবে যায়। বেশ কিছুদিন আগে প্রশাসনের তরফে কয়েকটি সোলার লাইট বসানো হয়েছিল। সেগুলো সব বিকল হয়ে পড়েছে। কেরোসিন পাওয়া যায় না।’ পাসা দোরজি ডুকপা, সাংগে ডুকপা, নাডো ডুকপার মতো অন্য বাসিন্দারাও প্রায় একইভাবে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। অবিলম্বে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামার কথায়, ‘ওই গ্রামে বহুবার গিয়েছি। স্থানীয়দের কথা ভেবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকদের একাধিকবার ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। লোকসভা নির্বাচনের পর ফের এই দাবি তুলব।’ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আলিপুরদুয়ারের রিজিওনাল ম্যানেজার গোবিন্দ তালুকদার বলেন, ‘ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হলে বন দপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বন দপ্তরের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে।’ অবশ্য বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর অপূর্ব সেন ফোন না তোলায় এই বিষয়ে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।